মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
কোথাও পলেস্তরা খসে পড়ছে, কোথাও ছাদের চাঙড় ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রোগীরা। এ সব পরিকাঠামোগত সমস্যা। তবে অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েও। অভিযোগ, সেই হাসপাতালে রাতে রোগী গেলেই ‘রেফার’ করার প্রবণতা রয়েছে। বহির্বিভাগে সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও অনেক সময় পাওয়া যায় না কোনও চিকিৎসককে। এমন অনেক অভিযোগ নিয়েই চলছে কোচবিহারের মাথাভাঙা হাসপাতাল।
কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে মাথাভাঙা শহর। মহকুমার এক দিকে রয়েছে শীতলখুচি, অন্য দিকে গোপালপুর, গিলাডাঙার মতো গ্রাম। ওই সব গ্রাম থেকে জেলা শহরে পৌঁছতে সময় লেগে যায় অনেকটা। সে সব কথা মাথায় রেখে চার দশকেরও বেশি সময় আগে মাথাভাঙায় গড়ে তোলা হয় মহকুমা হাসপাতাল। সামান্য পরিকাঠামো ও অল্প কয়েক জন চিকিৎসক নিয়ে সেই হাসপাতাল পথ চলতে শুরু করে। ধীরে ধীরে কলেবরে বড় হতে থাকে। বাড়তে থাকে রোগীর চাপও। পরিকাঠামোর সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সংখ্যাও বাড়ানো হয়। সেই হাসপাতাল নিয়ে এখন অভিযোগের শেষ নেই।
বাসিন্দাদের একাংশের নালিশ, বড় কোনও অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলেই ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়। ওই পরিষেবার জন্য বাধ্য হয়ে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি হতে হয় অনেককে। হাসপাতালে রাতে ‘রেফার’ প্রবণতা নিয়েও মাঝেমধ্যে অভিযোগ উঠে। রাতে কোনও রোগীর জরুরি প্রয়োজন হলে চিকিৎসক পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ। সে সব নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এক বার স্বাস্থ্য দফতর শো-কজ়ও করেছে। হাসপাতালের দাবি, তার পরে ‘রেফার’ প্রবণতা কমেছে।
মাথাভাঙার বাসিন্দা, বিজেপি নেতা দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘হাসপাতালের অবস্থা পুরোপুরি বেহাল। চাঙড় ভেঙে যে কোনও সময় বড় ঘটনা ঘটতে পারে। সে সবই যখন ঠিক করতে পারছে না, তা হলে পরিষেবা দিতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক।’’ সিপিএম নেতা সুধাংশু প্রামাণিক বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে সময়মতো চিকিৎসক নিয়োগ না করার কারণেই সমস্যা হচ্ছে। বহির্বিভাগে যে সমস্ত চিকিৎসকের বসার কথা, তাঁরা সেখানে বসছেন কিনা তা দেখার জন্য কোনও মনিটরিং কমিটি নেই। চিকিৎসকরা তাঁদের ইচ্ছামতো পরিষেবা দিচ্ছেন। তার জেরে রোগীরা সমস্যায় পড়ছেন।’’ তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য সব অভিযোগ মানতে চাননি।