স্বামী সঞ্জয় কর্মকারের সঙ্গে মেখলিগঞ্জের স্কুলে ববিতা সরকার। — নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে সাফল্য পেলেন ববিতা সরকার। সোমবার সপ্তাহের শুরুর দিনেই কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসাবে কাজে যোগ দিলেন তিনি। ওই স্কুলেই চাকরি করতেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। সেই নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে গিয়েছিলেন ববিতা। অবশেষে হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত হন অঙ্কিতা। তাঁর স্থানে নিয়োগপত্র দেওয়া হয় ববিতাকে।
সোমবার মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন ববিতা। দীর্ঘ লড়াইয়ের স্বীকৃতি মেলায় তিনি উচ্ছ্বসিত। ববিতা বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিনের লড়াইয়ের অবসান হল। আমি খুব খুশি হয়েছি। হাই কোর্টের নির্দেশে এই স্কুলে যোগ দিয়েছি। আগামী দিনে দায়িত্ব সহকারে এই কাজ করার চেষ্টা করব।’’
শিলিগুড়ির বাসিন্দা ববিতা। তাঁর বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার। ববিতা বলছেন, ‘‘আপাতত আমার স্বামীর সঙ্গে নিজের গাড়িতে যাতায়াত করছি। পরে পাশের কোনও এলাকায় থাকার চেষ্টা করব। কারণ এক জন মহিলার পক্ষে এত দূর যাতায়াত করা সম্ভব নয়।’’
অঙ্কিতার জায়গায় চাকরি পেলেও মন্ত্রীকন্যাকে নিয়ে কিছু বলতে নারাজ ববিতা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি কারও ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই করিনি। যোগ্যতার প্রশ্নে লড়াই করেছি। হাই কোর্ট আমাকে আমার অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। অঙ্কিতাকে আমার কোনও বার্তা দেওয়ার নেই। তিনি তাঁর মতো কাজ করেছেন। আমি আমার মতো কাজ করব।’’
পাশাপাশি পড়ুয়াদের প্রতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই শিক্ষকের বার্তা, ‘‘আমি এত দিন ধরে যে শিক্ষা অর্জন করেছি, তা ছাত্রীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। ছাত্রীরাও যাতে ন্যায়ের পথে চলতে পারে, অন্যায় দেখতে যাতে তারাও প্রতিবাদ করতে পারে সেই শিক্ষা দেব।’’
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রঞ্জনা রায় বসুনিয়া বলেন, ‘‘হাই কোর্ট এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশে ববিতা সরকার আজ স্কুলে যোগদান করেছেন। হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা তাঁকে কাজে যোগদান করিয়েছি। আজ থেকে নতুন এক জন শিক্ষিকা পেলাম এটা খুশির ব্যাপার।’’