উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার বেলেঘাটায় আইডি হাসপাতালের ল্যাবরেটরির সংস্কার কাজে বিলম্ব হওয়ায় রাজ্যে যক্ষ্মা নির্মূলকরণের কাজ অন্তত গত সাত মাস ধরে নির্ভর করছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কালচার অ্যান্ড ড্রাগ সেনসিটিভ টেস্ট ল্যাবরেটরির উপরেই। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে যক্ষ্মা রোগীর নমুনার বেশির ভাগ অংশ এখানেই পাঠানো হচ্ছে। প্রতিদিন টিবি কালচারের রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষা হচ্ছে এখানে। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধীন ওই ল্যাবরেটরি। স্বাস্থ্য দফতরের অধীন রাজ্য টিউবারকিউলোসিস বিভাগের এক আধিকারিক জানান, এ ধরনের ল্যাবরেটরি রাজ্যে চার জায়গায় কলকাতায় আইডি হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল, মুর্শিদাবাদ এবং বর্ধমান মেডিক্যালে রয়েছে। তার মধ্যে মুর্শিদাবাদ একেবারেই নতুন ল্যাবরেটরি। বর্ধমানেরটাও খুব বেশি পুরনো নয়। কলকাতার পরেই পুরনো ল্যাবরেটরি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের। তার পরিকাঠামো অনেক ভাল। তাই তাদের কাছেই মূলত নমুনা পাঠানো হচ্ছে। চাপ বেড়ে গেলে কিছু নমুনা বর্ধমান বা মুর্শিদাবাদে পাঠানো হচ্ছে। ওই বিভাগের আধিকরিকেরাও খুশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের পরিষেবার উপর। আধিকারিকদের একাংশের কথায়, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল যে পরিষেবাটা দিচ্ছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রেই জানা যায় নির্দিষ্ট সময় অন্তর এ ধরনের ল্যাবরেটরি সংস্কার, নতুন করে সাজানো বা ‘রিফারবিশমেন্ট’ করতে হয়। আইডি হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে সেই কাজ চলছে। তবে সময় বেশি লাগায় প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্যের টিউবারকিউলোসিস বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, কলকাতার ল্যাবরেটরি সংশোধনের কাজ শেষের দিকে। দ্রুত তা খোলার চেষ্টা হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অরুণাভ সরকার বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত নমুনা পরীক্ষা করে দিচ্ছি। এখানকার কর্মীরা সহযোগিতা করছেন। কিছু কর্মীর অভাব থাকলেও বাড়তি সময় তাঁরা পরিশ্রম করছেন।’’ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তরবঙ্গ ছাড়াও কলকাতা-সহ দুই চব্বিশ পরগনা, নদীয়া, বীরভূম-সহ অন্তত ৬ টি জেলা থেকে নমুনা আসছে পরীক্ষার জন্য। কিছু পরীক্ষা বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদের ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হচ্ছে। তবে ছোট ল্যাবরেটরি হওয়ায় সেগুলোতে বেশি নমুনা যাচ্ছে না। পুরনো ল্যাবরেটরি হওয়ায় বেশির ভাগটাই এখানে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। অন্য ল্যাবরেটরিতে যেখানে ২৫-৪৫ টা নমুনা পরীক্ষা হয়।অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর টিউবারকুলসিসের ড্রাগ সেনসিবিলিটি এই ল্যাবরেটরিতে ১২০০০ পরীক্ষা হয়েছে। বাইরে এর একেকটি পরীক্ষা করাতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়।এই রিপোর্টের উপর নির্ভর করেই চিকিৎসক কোন ওষুধ দেবেন তা ঠিক করেন। তাই এই রিপোর্ট না পেলে টিবি নির্মূলকরণের কাজে সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা ব্যহত হবে।