Arup Biswas

দলের কোন্দল সামাল দিতে কঠোর অরূপ

জলপাইগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সেখানে ছিলেন উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের কোর কমিটির সভাপতি গৌতম দেবও।     

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২০ ০৭:২৩
Share:

চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

কলকাতার দলীয় কর্মিসভায় দলের নেতা-কর্মীদের শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২ মার্চ নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে দলনেত্রী বলেছিলেন, ‘‘শৃঙ্খলা না মানলে অন্য দলে চলে যেতে পারেন।’’ জলপাইগুড়িতে দলীয় কোন্দল থামাতে মঙ্গলবার রাত থেকে সেই ‘লাইন’ মেনেই কড়া অবস্থান নিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস। বুধবার জেলার বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক ছিল অরূপ বিশ্বাসের। পরে জলপাইগুড়ি পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। সেখানে ছিলেন উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের কোর কমিটির সভাপতি গৌতম দেবও।

Advertisement

মঙ্গলবার নয়া জেলা কমিটি নিয়ে যে যে নেতাই ‘অন্য সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব’ বা ‘বসে যাব’ এমন কথা বলেছেন, উত্তরে অরূপ বলেছেন, ‘‘দল থেকে চলে যান। ব্ল্যাকমেল করে দলে থাকা যাবে না। দলে থাকলে দলের শৃঙ্খলা মানতে হবে।” জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের নয়া কমিটি বাতিলের দাবি তুলেছিলেন বিক্ষুব্ধরা। সেই দাবি মানেননি অরূপ। আবার দলের বর্তমান জেলা নেতৃত্ব যে কমিটি গড়েছে, হুবহু তাও থাকবে না বলে অরূপ বিধায়কদের জানিয়েছেন। দলের পর্যবেক্ষকের নির্দেশ, প্রতিটি বিধায়কের সঙ্গে বসে তাঁদের ক্ষোভ শুনবেন দলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী। সেখানে থাকবেন জেলার কো অর্ডিনেটর চন্দন ভৌমিকও। তারপরে কমিটিতে নতুন নাম অর্ন্তভুক্ত হতে পারে বা কোনও নাম বাদও যেতে পারে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুত নতুন কমিটি ঘোষণা করবে তৃণমূল।

বুধবার জেলা তৃণমূল অফিসে প্রথমে বিধায়ক ও পরে পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে অরূপ বিশ্বাস বলেন, “দলে কোনও ক্ষোভ নেই।” এ দিন বৈঠক থেকে বেরিয়ে কোনও বিধায়ক কিছু বলতে চাননি। সূত্রের খবর, এ দিনের মিটিংয়ে দলের বিধায়কদের প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানানো নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন অরূপ।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ির বাবুপাড়ায় বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন অরূপ। সেই বৈঠকেই তাঁর কড়া মেজাজ দেখা গিয়েছিল বলে তৃণমূল কর্মীদের দাবি। বিক্ষুব্ধদের বৈঠকে ময়নাগুড়ির এক প্রতিনিধি ব্লকে যুগ্ম সভাপতি বসানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে বক্তৃতার শেষে বলেন, “এমন চলতে থাকলে আমরা অন্য কিছু ভাবতে বাধ্য হব।” সে কথা শেষ হতেই অরূপ বিশ্বাস উঠে হাত মাইক নিয়ে বলেন, “ব্ল্যাকমেল করবেন না। অন্য দলে চলে যেতে পারেন। আপনার কথার জন্য হয় ক্ষমা চান না হলে দল ছেড়ে দিন।” ওই নেতা সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে নেন। সেই বৈঠকেই ধূপগুড়ির এক নেতা এলাকার এক জনপ্রতিনিধির নামে ক্ষোভ জানানোর প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন, “উনি বিজেপিতে চলে গেছেন।” জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ পাল্টা বলেন, “দলে থেকে দলের জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে এত বড় কথা বললে। তুমি ছেড়ে দাও। তোমাদের জন্যই দল হেরেছে।”

বিধায়কদের সঙ্গে এ দিনের বৈঠকেও তেমন মেজাজেই দেখা গিয়েছে অরূপকে। এক বিধায়কের কথায়, “একটু চাপ দিলেই উনি (অরূপ) রেগে যাচ্ছেন। শৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব কড়া হচ্ছে, সেটা বুঝিয়ে দেওয়া হল।” বিধায়কদের সঙ্গে মাসে একবার করে জেলা নেতৃত্বকে বৈঠকের পরামর্শও দিয়েছেন অরূপ। এ দিন জলপাইগুড়ির কাউন্সিলরদের ‘কাজ করে’ যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অরূপ। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, “আমি এবং অরূপ দু’জনেই পুর রাজনীতি থেকে উঠেছি। তাই কিছু পরামর্শ দিলাম।” জলপাইগুড়ি পুরভোটে লড়ার কিছু পরিকল্পনা জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী তৈরি করছেন বলে জানিয়েছেন অরূপ বিশ্বাস।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement