প্রতীকী ছবি।
এ এক অন্য স্কুলের কাহিনী।
একই ছাদের নীচে চলছে বাংলা, হিন্দি এবং আরবি ভাষার স্কুল। এ ছাড়াও বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র এবং শিশু শিক্ষাকেন্দ্রও চলছে একই ছাদের নিচে। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ভিতরে চলছে এমন স্কুল। সাজাপ্রাপ্ত আবাসিকদের মধ্যে বেশ কয়েক জন স্কুল শিক্ষক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ হয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কেউ আবার সহকারী শিক্ষক। কেউ গ্রন্থাগারিক।
সংশোধনাগার সূত্রের খবর, বাংলা মাধ্যমের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন এক সাজাপ্রাপ্ত আবাসিক। তিনি আগে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। আবাসিকদের পড়াশোনা শেখানোর পাশাপাশি নাট্য জগতেও তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। রাতে সেলের ভিতরে বসে সমাজ সচেতনতা বাড়াতে বেশ কয়েকটি নাটক লিখেছেন তিনি।
আবাসিকদের নিয়েই তাঁর লেখা নাটক মঞ্চস্থও হয়েছে। আবাসিকদের মধ্যে একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন। তিনি এখন সংশোধনাগারের গ্রন্থাগারিক হিসেবে কাজ করছেন। গ্রন্থাগারে প্রায় দু’হাজার বই রয়েছে। আবাসিকেরা নিয়ম মেনে প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরনের বই নিচ্ছেন। পড়া শেষে আবার আলোচনাচক্রের আসরও বসে গ্রন্থাগারে।
বাংলা, হিন্দি এবং আরবি ভাষার স্কুলে ভর্তি হতে আবাসিকদের মধ্যে আগ্রহ এখন অনেকটাই বেড়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। সরকারি নির্দেশ মেনে রোজই ‘সন্দীপন’ বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রেও যাচ্ছেন আবাসিকেরা। অনেক আবাসিকই সংশোধনাগারে আসার পর এই শিক্ষাকেন্দ্র থেকে নিজের নাম লিখতে শিখেছেন। বই পড়ার প্রতি আগ্রহী হয়েছেন অনেকেই।
সংশোধনাগারের মহিলা বিভাগে অনেক আবাসিকদের সঙ্গে তাঁদের শিশু সন্তানেরা রয়েছেন। ওই শিশুদের জন্য খোলা হয়েছে শিশু শিক্ষাকেন্দ্র। এই কেন্দ্রেও শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন সাজাপ্রাপ্ত আবাসিকেরাই ।
সংশোধনাগারের পদস্থ আধিকারিক অপূর্ব সেন বলেন, ‘‘নতুন আবাসিক আসা মাত্রই তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা জেনে নেওয়া হয়। আবাসিকদের মধ্যে স্কুলে ভর্তি হতে এখন যথেষ্ট উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। গ্রন্থাগার থেকে বই নিয়ে পড়ার ক্ষেত্রেও আগ্রহ বাড়ছে আবাসিকদের মধ্যে।’’