শিলিগুড়ির নিখোঁজ তরুণী সঙ্গীতা কুণ্ডুকে খুঁজে বার করতে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা রুজুর আবেদন করা হল।
বুধবার তরুণীর দাদা শম্ভুবাবুর হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে ওই আবেদন জমা দিয়েছেন দুই আইনজীবী বৈদুর্য ঘোষাল ও অর্ণব সেনগুপ্ত। অণর্ববাবুর দাবি, ‘‘আবেদনের ভিত্তিতে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে উচ্চ আদালত। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৩ নভেম্বর শুনানি হওয়ার কথা।’’
এ দিন নিখোঁজ তরুণীর দাদা জানান, শিলিগুড়িতে দিনের পর দিন নানা মহলে ঘুরেও তাঁর বোনের খোঁজ না পেয়েই তিনি উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার বোন কোথায় গেল তা নিয়ে পুলিশ কিছুই স্পষ্ট করে বলতে পারছে না। পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। নিখোঁজ হওয়ার পরে প্রায় তিন মাস হতে চলেছে। অজানা আশঙ্কায় আমাদের বুক কাঁপছে। অনেক দেরি হয়েছে। তাই বোনকে খুঁজে বার করার জন্য উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’’
গত ১৭ অগস্ট সঙ্গীতা সেবক রোডের জিম-পার্লার থেকে নিখোঁজ হয়েছেন বলে তাঁর সংস্থার মালিক পরিমল সরকার লিখিত ভাবে ভক্তিনগর থানায় জানিয়েছেন।
সেই অনুযায়ী, ৬৫ দিন কেটে গিয়েছে। ইতিমধ্যে মঙ্গলবার পরিমলবাবু সহ জিম-পার্লারের ৪ জন গ্রেফতার হয়েছেন কিন্তু, তরুণী কোথায় আছেন সেই ব্যাপারে পুলিশের কাছ থেকে শম্ভুবাবুর কোনও কিছু জানতে পারেননি বলে দাবি করেছেন। তাঁদের শিলিগুড়ির আইনজীবী অর্ণববাবু জানান, সাধারণত এমন আবেদনের প্রেক্ষাপটে উচ্চ আদালত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কাছ থেকেই বিশদে তথ্য জানতে চায় উচ্চ আদালত।
সেই মতো সংশ্লিষ্টদের কাছে উচ্চ আদালতের তরফে নোটিশও পাঠানো হয়ে থাকে। তাঁদের কাছ থেকে রিপোর্ট তলবও করতে পারে উচ্চ আদালত। আইনজীবী জানান, যে হেতু নিখোঁজ তরুণীর হদিস পুলিশ এখনও করতে পারেনি সে জন্যই সিবিআই তদন্তের আর্জির যৌক্তিকতা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবে উচ্চ আদালত।
শিলিগুড়ির একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও ওই মামলায় সামিল হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে সঙ্গীতার শুভার্থীরা জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ির কাছারি রোড যুবক সঙ্ঘের তরফে তরুণীর অন্তর্ধান রহস্যের কিনারা করার দাবিতে মিছিল করা হয়েছে। শহর জুড়ে ব্যানার, ফেস্টুন টাঙিয়েছেন তাঁরা। ওই ক্লাবের সভাপতি তথা তৃণমূলের নেতা মদন ভট্টাচার্য পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা মহিলা কমিশনের প্রাক্তন সদস্যা জোৎস্না অগ্রবালও দ্রুত তরুণীর হদিস করার জন্য সরব হয়েছেন।
জিম-পার্লারের মালিক পরিমলবাবু অবশ্য গ্রেফতার হওয়ার আগে থেকেই দাবি করেছেন, তিনি কিছুই জানেন না। তাঁর পরিবারের তরফেও দাবি করা হয়েছে, তাঁদের ব্যবসায়িক প্রতিপত্তি খাটো করতে কোনও ষড়যন্ত্র হয়ে থাকতে পারে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারের একাধিক অফিসার জানান, চার জনকে গ্রেফতারের পরে তদন্তের অগ্রগতি হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব তরুণীর হদিস করতে পুলিশও চেষ্টা করছে বলে ওই অফিসারদের দাবি।