বিধিহীন: ফল হাতে পাওয়ার পর ছাত্রীরা মাতল উচ্ছ্বাসে। জলপাইগুড়ি মাড়োয়ারি গার্লস স্কুলে। মাস্ক নেই কারও মুখে। ছবি: সন্দীপ পাল।
পাশের হার বেড়ে যাওয়ায় একাদশে ভর্তি নিয়ে চিন্তা বাড়ছে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে। কোচবিহার জেলা অভিভাবক সমিতি কর্তারাও ওই ব্যাপারে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ নেতৃত্বেরও আশঙ্কা, গ্রামাঞ্চলে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা কম। তাই কিছু স্কুলে চাপ বাড়বে। এর সঙ্গে পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ কতটা এ বছর পাওয়া যাবে, তা নিয়েও দুই জেলায় চর্চা শুরু হয়েছে। তবে দুই জেলার শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে আসন বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। কিছু মাধ্যমিক স্কুলকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত করা হবে। তা হয়ে গেলে, একাদশে ভর্তি নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না।
এবিটিএর কোচবিহার জেলা সম্পাদক সুজিত দাস বলেন, “গত কয়েকবছরের নিরিখে এ বছর পাশের হার অন্তত ২০ শতাংশ বেড়েছে। তাই ভর্তিতে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।’’ কোচবিহার অভিভাবক সমিতির সম্পাদক নেপাল মিত্র বলেন, “জেলায় বিপুল পাশের হারে পচ্ছন্দের স্কুলে ভর্তির সুযোগ কমবে। অনেকেই তাই উদ্বেগে রয়েছেন।”
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, এ বার কোচবিহার জেলায় মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৯,৯৯০ জন। সকলেই পাশ করেছে। জেলায় দুশোর বেশি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। পর্ষদের কোচবিহারের প্রতিনিধি মিঠুন বৈশ্য বলেন, “যত সংখ্যক পড়ুয়া পাশ করেছে সেই তুলনায় আসন সংখ্যা অনেক বেশি। তাই ভর্তিতে সমস্যার কোনও বিষয়ই নেই।”
আলিপুরদুয়ার জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর জেলায় ১২৪টি হাইস্কুলের ১৪ হাজার ৬৬৫ জন ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পাশ করেছে। গত বছর ১৩ হাজার ৮৫০ জন ছাত্রঠছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছিল। জেলা স্কুল পরিদর্শক আশানুল করিম বলেন, ‘‘১০৪টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে জেলায়। এ বছর বেশ কয়েকটি স্কুলে আসন বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে। তার অনুমতি পেয়ে যাব দ্রুত। তাই একাদশে ভর্তি নিয়ে আমাদের জেলায় কোনও সমস্যা হবে না।’’
তবে শিক্ষকদের তরফে জানা গিয়েছে, ভোটের আগে উচ্চ মাধ্যমিকস্তরের শিক্ষকদের স্পেশ্যাল গ্রাউন্ডে সাধারণ বদলির ফলে, আলিপুরদুয়ারে শিক্ষকের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। আশানুল জানান, সেই ঘাটতি পূরণ করেতে শিক্ষা দফতর উদ্যোগী হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ হয়ে গেলে, পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়ার ক্ষেত্রেও কাউকে সমস্যায় পড়তে হবে না।
আলিপুরদুয়ার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু বিশ্বাস বলেন, ‘‘এ বছর আমার স্কুলের ২৪৩ জন মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছে। আমাদের স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ৩২৫টি আসন রয়েছে। আমাদের ভর্তি নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না।’’ আবার কামাখ্যাগুড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌসুমী সরকার বলেন, ‘‘স্কুলের ৩৫৩ জন পাশ করেছে। আর একাদশে ৩০০ পুড়ুয়াকে আমরা ভর্তি করতে পারব।’’
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কোচবিহার ডিসট্রিক্ট অ্যাডভাইসরি বোর্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক মানস ভট্টাচার্য বলেন, “বেশ কিছু স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হয়েছে। আসনও বাড়ানো যেতে পারে প্রয়োজনে। তাই জেলার ক্ষেত্রে ভর্তির কোনও অসুবিধে নেই।