পুড়ে ছাই: আগুন দেওয়া হয় সরকারি বাসে। কানকিতে। নিজস্ব চিত্র
নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে তৃণমূলের মিছিল থেকে যাত্রিবাহী বাসে ‘ছোড়া’ ইট-পাথরে কয়েক জন জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, সরকারি একটি বাসে আগুনও লাগানো হয়। এলাকাবাসীর একাংশের নালিশ, এ সব কিছুই হয় রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানির সামনে। যদিও মন্ত্রী তা অস্বীকার করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ চাকুলিয়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে চাকুলিয়া-কানকি ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে মিছিল বের হয়। অভিযোগ, মিছিলের জেরে যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটি যাত্রিবাহী বাসে ঢিল ছোড়া হয়। আগুন লাগানো হয় একটি সরকারি বাসে। জখম হন কয়েক জন যাত্রী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।
এলাকাবাসীর একাংশ জানান, এ দিন চাকুলিয়া থেকে ওই মিছিল পৌঁছয় কানকি ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে। প্রায় হাজার দশেক মানুষ তাতে শামিল ছিলেন। কানকিতে ওই কর্মসূচিতে যোগ দেন গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানি। অভিযোগ, ওই সময়েই কয়েকটি বাসে হামলা চলে।
কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগ, কর্মসূচি শেষ হওয়ার মুখে দূরপাল্লার কয়েকটি বাসে ঢিল পড়তে শুরু করে। মিছিলের থেকেই হামলা চলে। একটি সরকারি বাসে আগুন ধরানো হয়। যাত্রীরা হুড়মুড়িয়ে বাস থেকে নেমে পালাতে শুরু করেন। কয়েক জন ইটের আঘাতে আহত হন। জখম হন রাস্তায় পড়েও। কয়েকটি ট্রাকেও ভাঙচুর করা হয়। কয়েকটি বাড়িতেও হামলা চলে। জনতাকে হঠাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস।
তবে মন্ত্রীর দাবি, তিনি চলে যাওয়ার পরেই ঘটনাটি ঘটে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পথসভার পরেই ওখান থেকে বেরিয়ে যাই। কিছুটা দূরে ঘটনা ঘটেছে। আমাদের আন্দোলন সব জায়গায় শান্তিপূর্ণ ভাবেই হচ্ছে। তৃণমূলকে বদনাম করতেই এমন কাণ্ড ঘটানো হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমি খবর পেয়েছি এ দিন কানকিতে বামেদের কার্যালয়ে বসেছিলেন চাকুলিয়ার বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর) সিপিএম নেতা অশোক সিংহ। ওঁদের নেতৃত্বেই ওই হামলা চলেছে।’’
চাকুলিয়ার তৃণমূল ব্লক সভাপতি মিনহাজউল আরফিন আজাদও বলেন, ‘‘বাসে ঢিল বা আগুন লাগানোয় দলের কেউ জড়িত নন। দলকে বদনাম করতে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।’’
অভিযোগ উড়িয়ে ভিক্টর বলেন, ‘‘মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এমন ঘটল। এখন আমাদের উপরে দায় চাপাচ্ছেন। উনি মন্ত্রী হিসেবে ব্যর্থ। দ্রুত ইস্তফা দেওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের কথা বলছেন। আর তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যের উপস্থিতিতেই সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেওয়া হচ্ছে। হামলার মুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।’’
অশোককে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জেলা পুলিশ সুপার সচিন মক্কার জানিয়েছেন, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’