Chopra Assault Case

চোপড়াকাণ্ডে গ্রেফতার জেসিবি-ঘনিষ্ঠ বুধা, ফেলে পেটানোর সময় তাজিমুলের সঙ্গেই ছিলেন ধৃত যুবক

ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পরে রবিবার রাতেই তাজিমুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে আরও এক জনকে গ্রেফতার করল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

চোপড়া শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ ১৩:৩৬
Share:

প্রকাশ্যে আসা গণপিটুনির ভিডিয়োর দৃশ্য। — ফাইল চিত্র।

চোপড়াকাণ্ডে পুলিশের জালে আরও এক। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে ‘ভাইরাল ভিডিয়ো’র ঘটনায় বুধা মহম্মদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধা এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত তাজিমুল ইসলাম ওরফে জেসিবির ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। ঘটনার সময় তাজিমুলের সঙ্গেই ছিলেন তিনি।

Advertisement

রবিবার দুপুরে চোপড়ার তৃণমূল নেতা তাজিমুলের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিয়োয় দেখা যায় এক তরুণীকে রাস্তায় ফেলে একছড়া কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারছেন জেসিবি। মার খেতে খেতে গুটিয়ে যাওয়া মেয়েটিকে চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলা হচ্ছে। তার পরে আবার শুরু হচ্ছে মার। একই সঙ্গে এক তরুণকেও একই ভাবে মারতে দেখা যায় (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তবে ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরই শুরু হয়েছিল বিতর্ক।

ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পরে রবিবার রাতেই তাজিমুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে আর কারা কারা যুক্ত তার খোঁজও শুরু করে তারা। তদন্তে নেমে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে আরও এক জনকে গ্রেফতার করল। চোপড়া থানার আইসি অমরেশ সিংহ জানান, নাককোটি এলাকা থেকে বুধাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে বলে জানান ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জুব্বে টমাস।

Advertisement

রবিবার তাজিমুলের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। আসরে নেমেছে বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই নির্যাতিত যুগলের সঙ্গে দেখা করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। মঙ্গলবার চোপড়ায় নির্যাতিত যুগলের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেই কারণে দিল্লি থেকে উড়ে এসেছিলেন শিলিগুড়িতেও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চোপড়ায় না গিয়ে শিলিগুড়ি থেকেই ফিরে যান রাজ্যপাল। তবে চোপড়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সরকারকে একহাত নেন তিনি।

অন্য দিকে, মঙ্গলবারই চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানকে ফোন করে ধমক দেন মুখ্যমন্ত্রী। দলীয় বিধায়ককে ফোন করেন তিনি। মিনিট পাঁচেক কথাও হয় তাঁদের। উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, চোপড়ায় যাতে আগামী দিনে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে চলতে হামিদুলকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে চোপড়ার সমস্ত পঞ্চায়েত ও স্থানীয় ক্লাবগুলিকেও বার্তা পাঠাতে বলেছেন, আগামী দিনে কোনও সালিশি সভা যেন না বসানো হয়। যদি এলাকায় কোনও সমস্যা হয়েই থাকে, তবে তা যেন পুলিশ-প্রশাসনের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও চোপড়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত যদি দলের কোনও পদে থেকে থাকেন, তা হলে যেন অবিলম্বে তাঁকে সেই পদ থেকে ছেঁটে ফেলা হয়। এমনই নির্দেশ বিধায়ককে দিয়েছেন মমতা।

বিগত কয়েক দিনে চোপড়া থানা এলাকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সালিশি সভা করে টাকা তোলার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল। সেই সংক্রান্ত বেশ কিছু খবরও ছড়িয়েও পড়ে সমাজমাধ্যমে। এই বিষয়ে উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘সমস্ত পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এখন থেকে আর কোনও পঞ্চায়েতে সালিশি সভা করা যাবে না।’’ স্থানীয় ভাবে সভা করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠছে বলেই এই নির্দেশ, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement