গরুবাথান এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে অনীত থাপা। নিজস্ব চিত্র
‘নির্দল জাদুতে’ পাহাড় জয় অব্যাহত অনীত থাপার নেতৃত্বাধীন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জিতে তো বটেই, নির্দলদের যোগদানে একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের পরে এ বার গরুবাথান পঞ্চায়েত সমিতিও দলের দখলে গেল। সোমবার তিন নির্দল প্রার্থীকে দলে নিয়ে বোর্ড গঠন নিশ্চিত করল শাসক দল। পাহাড়ের নয়টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে সাতটি প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দখলে থাকল। আর পাহাড়ের রাজনৈতিক নানা জল্পনা বাড়িয়ে জিটিএ প্রধান তথা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত ঘোষণা করলেন, পাহাড়ের নয়টি ব্লকের ন’টি পঞ্চায়েত সমিতিই তাঁদের দখলে আসতে চলেছে। এতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাজোটের মিরিক পঞ্চায়েত সমিতিতে বড় ভাঙনের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অনীত বলেছেন, ‘‘পাহাড় জুড়ে জেতা নির্দলেরা তো আমাদেরই নেতা-নেত্রী। ভোটের টিকিট ঘিরে আমাদের পরিবারে কিছু মনোমালিন্য হয়েছিল, এ বার সব মিটতে চলেছে। লাইন দিয়ে জেতা নির্দলদের বাড়ি ফেরা শুরু হয়েছে। দার্জিলিং ও কালিম্পং মিলিয়ে ৯টি পঞ্চায়েত সমিতিই প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দখলে থাকবে।’’
পাহাড়ে ১১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং নয়টি পঞ্চায়েত সমিতির ভোট হয়েছে। এর মধ্যে কালিম্পং, লাভা-আলগাড়া, কার্শিয়াং, সুখিয়াপোখরি-জোরবাংলো, রংলি-রংলিওট পঞ্চায়েত সমিতি ভোটে জিতে এবং গরুবাথান পঞ্চায়েত সমিতি নির্দলদের যোগদানে পাহাড়ের শাসক দলের দখলে গেল। বাকি পেডংয়ে নির্দলেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং মিরিক ত্রিশঙ্কু রয়েছে। মিরিকে ১৫টি আসনের মধ্যে মোর্চা চারটি, বিজেপি পাঁচটি এবং নির্দলেরা ছ’টি আসন পেয়েছেন। নির্দলদের মধ্যে ‘মহাজোটের’ প্রার্থীরা থাকায় সমিতি বিরোধীদের দখলেই থাকার কথায়। তেমনই, ১০ আসন বিশিষ্ট পেডং পঞ্চায়েত সমিতিতে ভোটে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা চারটি, বিজেপি একটি এবং নির্দলেরা পাঁচটি আসন জিতেছে। এখানে নির্দলেরা যে দিকে যাবেন, বোর্ড সে পক্ষ গড়বে।
সোমবার বিকালে এই হিসাব উল্টেপাল্ট করে পাহাড়ে নতুন আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন অনীত থাপা। পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন, পেডংয়ের নির্দলেরা শাসক দলেই যোগ দিতে চলেছে। যেমন ২২ আসনের গরুবাথান পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ন’টি, বিজেপি একটি এবং নির্দলেরা ১২টি আসন পায়। এ দিন তিন জন নির্দল শাসক শিবিরে ফিরে আসায় প্রজাতান্ত্রিকদের সংখ্যা ১২টি হল। আরও কয়েক জন নির্দলও যোগদানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে মিরিক নিয়ে বিরোধী শিবিরে উৎকণ্ঠা শুরু হয়ে গিয়েছে। পাহাড়ে একমাত্র মিরিকেই ‘মহাজোট’ কিছু আসন পেয়েছে।
ইতিমধ্যে বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছেন, ‘‘গণতন্ত্র মেনে পাহাড়়ে সবাই কাজ করবে। কিন্তু দল ভাঙনের রাজনীতির সম্ভাবনা রয়েছে। তা হলে, বিষয়টি ভাল হবে না। মানুষের রায়ের বিপক্ষে গেলে মানুষই এর জবাব দেবে।’’