দার্জিলিঙয়ের ম্যালে, নেপালী কবি ভানু ভক্তের, ভানু জয়ন্তীতে জিটিএ প্রধান অনিত থাপা। । ছবি: স্বরূপ সরকার।
পাহাড়ে কার্যত সংখ্যাগরিষ্ঠতা মেলার পরে, এ বার রাজনৈতিক পরিবেশ স্বাভাবিক করে উন্নয়নের কাজ শুরুর কথা জানালেন জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। গত বুধবার দলের কেন্দ্রীয় স্তরের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন অনীত। ১৮ জুলাই কলকাতা হাই কোটের নির্দেশের পরে বোর্ড গঠনের বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তাই আপাতত দলের বিক্ষুব্ধ, নির্দল বা অন্য দলে যাওয়া পাহাড়ের সব স্তরের নেতা-নেত্রীদের 'ঘর ফেরার’ ডাক দিয়েছেন অনীত।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরুও হয়েছে নির্দলদের শাসক শিবিরে শামিল হওয়া। এ দিনই তিস্তা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী নির্দল অর্জুন ছেত্রী, রঙ্গো এলাকা থেকে পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী নির্দল দেবরাজ সুব্বা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দিয়েছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি মিলিয়ে আরও অন্তত ১০ নির্দল ধাপে ধাপে শাসক শিবিরে আসতে প্রস্তুত বলে নেতাদের দাবি। অনীত বলেন, ‘‘ভোট শেষ। সব স্বাভাবিক করে উন্নয়নের কাজে নামতে হবে। বর্ষার মরসুম, বৃষ্টি, ধস সব মাথা রেখে এগোতে হবে। আপাতত বোর্ড গঠনের আগে ক্ষুব্ধ, বিক্ষুব্ধদের বাড়ি ফেরার কথা বলেছি।’’
দলীয় সূত্রের খবর, এবার পাহাড়ের ভোটের প্রায় ৪৮.৫৬ শতাংশ প্রজাতান্ত্রিক দলের দখলে রয়েছে। এর বাইরে, একটা বড় সংখ্যক নির্দল প্রার্থী যাঁরা জিতেছেন, তাঁরা পাহাড়ের শাসক দলের টিকিট-না-পাওয়া প্রার্থী। তাঁরা দলে ফিরতে থাকলে ভোটের শতাংশ ৫০ ছাড়াবে বলে জানা গিয়েছে। এ বার ভোটে বহু এলাকায় শাসক দলের একাধিক প্রার্থী ছিলেন। কেউ সরাসরি টিকিট পাওয়া, আর এক দল টিকিট না পাওয়া। কাউকে ‘চাপের রাজনীতি’তে প্রত্যাহার না করিয়ে লড়াই করার উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। এলাকাগুলিতে দলের তরফে ‘ফ্রি জ়োন’ বলা হয়েছে। দলের ভোটের সব রকম সাহায্য প্রার্থীদের করাহয়েছে। এ বার সেখানে যে জিতবে তিনি তো দলে থাকবেনই। বাকিরা হেরে গেলেও দলেই জুড়ে থাকছেন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, দল বিক্ষুব্ধদের বহিষ্কার, সতর্ক করা কিছুই করেনি। উল্টে, সবাইকে ভোটে সাহায্য করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ভোটের পর সরকারি ও বিক্ষুব্ধ সবাই দলেই আছেন।
মিরিক ব্লকে অবশ্য বিরোধী মহাজোট ভাল ফল করেছে। এ দিন দুপুরে বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা জিএনএলএফ, সিপিআরএম, হামরো পার্টি, জনমুক্তি মোর্চার নেতাদের নিয়ে জোটের সভা করে উন্নয়নের দিশার কথা বলেছেন। আলাদা করে এলাকায় গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অজয় এডওয়ার্ডও। মিরিকে ‘ঘোড়া কেনাবেচার’ আশঙ্কায় মহাজোটের জয়ীদের একটি হোটেলে রাখা হয়েছে বলে খবর। সাংসদ দাবি করেন, ‘‘শাসক দল টাকা, হুমকি, প্রলোভন দেখিয়ে ভাঙনের চেষ্টা করছে। আমরা ওদের সতর্ক করে দিচ্ছি। মানুষের রায় মেনে না নিলে, ফল ভাল হবে না।’’