—ফাইল চিত্র
সাড়ে তিন বছর পর গত রবিবার দার্জিলিং ফিরেই মোটর স্ট্যান্ডের সভা থেকে বিনয় তামাং, অনীত থাপাকে পাহাড় ছাড়া করার হুমকি দিয়েছিলেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। সাতদিনের মাথায়, শনিবার দুপুরে দার্জিলিং মোটর স্ট্যান্ডের একই জায়গায় মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে পাল্টা গুরুংকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা। সোনদা থেকে দার্জিলিং প্রায় ১৭ কিলোমিটার পরিবর্তন পদযাত্রার করে অনীত বললেন, ‘‘আজ থেকে দার্জিলিং শহরেই থাকব। বিমল গুরুংকে বলে যাচ্ছি, আপনার বাড়ির শহরে আছি। পুরুষ মানুষ হলে এবং ক্ষমতা থাকলে অনীত, বিনয়কে পাহাড় ছাড়া করে দেখান। আপনার শুকনো হুঙ্কারে পাহাড়বাসী আর ভয় পায় না।’’
নতুন পাহাড় গড়ার কথা সভা মঞ্চ থেকে বারবার বলেছেন অনীত। সকালে সোনদা থেকে অনীত পদযাত্রা শুরু করতেই মিছিলে ভিড় বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে কয়েক হাজার মোর্চা কর্মীরা তাতে যোগ দেন। বিনয় তামাংয়ের পেটে অস্ত্রোপচার হওয়ায় তিনি কর্মসূচিতে অংশ নেননি। বিনয়, অনীতের নামেই স্লোগান দিতে দিতে মিছিল এগিয়ে চলে। এতে কার্শিয়াং থেকে দার্জিলিং অবধি মূল রাস্তায় যানজট হয়। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে প্রচুর পর্যটক দার্জিলিঙে গিয়েছিলে। সকাল থেকে মোর্চার এই কর্মসূচির জেরে তাঁদের সমস্যা বাড়ে। শৈলশহর থেকে মংপু হয়ে গাড়ি নামা শুরু হয়। এতে পর্যটকদের খরচও বাড়ে। মিছিল, সভার জন্য সমস্যা বাড়ে দার্জিলিং শহরেও। তাই মঞ্চে উঠেই পর্যটকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন অনীত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। বহু দিন আগে ঘোষণা করা কর্মসূচি করতে হল। আগামী দিনে পর্যটকদের যাতে অসুবিধা না হয়, তা আমরা মাথায় রাখব।’’
এর পরেই নতুন চিন্তা, নতুন ভাবনার কথা জানিয়ে পরিবর্তনের কথা বলেন অনীত। তিনি অভিযোগ করেন, বরাবরই গুরুং গোর্খাল্যান্ডকে ঢাল বানিয়ে রাজনীতি করেন। তিনি বলেন, ‘‘২০১৭ সালে আমরা যা বলেছিলাম, করেছিলাম তা এখন অনেকে করছেন। এতেই বোঝা যাচ্ছে, বিচার বুদ্ধিতে কে এগিয়ে আছে। আর কে পাহাড়কে আগুনে পুড়িয়ে, চা বাগান, পর্যটনকে নষ্ট করে নিজের লোককে ফেল পালিয়েছিল, তা সবাই দেখছে। আসলে যার যেমন বুদ্ধি, তেমন কাজ।’’
দুই মোর্চার টক্কর বাড়তে থাকায় চিন্তিত পাহাড়বাসীর একাংশ। তাঁরা মনে করছেন, যে ভাবে গুরুং-অনীতেরা একে অপরকে চ্যালেঞ্জ করা, হুমকি দেওয়া শুরু করেছেন তা সংঘাতের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। যেমন, অনীত এদিন বলেন, ‘‘একজন পাতলেবাস থেকে বসে সরকারি ঠিকাদার, যুব মোর্চার লোকজনকে শাসাচ্ছেন। রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনকে এটা দেখতে হবে। নইলে তো অশান্তি বাড়বে। আর তা তো আমরা বাড়তে দেব না। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেব।’’ এই পরিস্থিতিতে আজ, রবিবার কার্শিয়াং মহকুমার সিটং-এ জনসভার ডাক দিয়েছেন বিমল গুরুং। গুরুং আগেই ঘোষণা করেছিলেন, পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্সে তিনি পরপর জনসভা করবেন।