ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ নির্বাচনের আগে প্রচারে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তখন শিলিগুড়িতে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা অনন্ত রায় (মহারাজ)। বেশ কিছু সময় দু’জনের মধ্যে কথা হয়েছে। গ্রেটার সূত্রেই জানা গিয়েছে, তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহারাজকে দিল্লি যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করেন। সেই কথা রাখতেই দিল্লি যাবেন মহারাজ। তবে কবে তিনি দিল্লির পথে রওনা হবেন, এখনও ঠিক হয়নি। মাহারাজ বলেন, “দিল্লি যাব। কবে যাব, পরে জানিয়ে দেব।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রেটারের এক নেতা বলেন, “মহারাজ বহুবার দিল্লি গিয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে। কথা হয়েছে। এ বারও তিনি যাবেন। নির্দিষ্ট বিষয়ে কথা বলবেন।”
মহারাজের সঙ্গে এই মুহূর্তে তৃণমূল ও বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক। একদিকে তাঁকে যেমন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেখা গিয়েছে, একই ভাবে তার কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছে অনন্ত মহারাজকে। মহারাজার আমন্ত্রণেই কোচবিহারে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই অবস্থার দু’পক্ষই মহারাজকে নিজেদের কাছে রাখতে তৎপর। দু’পক্ষই মনে করে, মহারাজার হাতে একটি বড় অংশের রাজবংশী সম্প্রদায়ের ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ও একাধিক জায়গায় ভাল ফল করতে হলে সেই ভোট ব্যাঙ্ক গুরুত্বপূর্ণ। গত লোকসভার পরে এ বার বিধানসভায় উত্তরবঙ্গের ওই অংশে খারাপ ফলের পিছনে রাজবংশী ভোটের বড় অংশ বিপক্ষে চলে যাওয়া বলে মনে করে তৃণমূল। উল্টোদিকে বিজেপি কোনও ভাবেই মহারাজকে হাতছাড়া করতে রাজি নয়।
মহারাজার সঙ্গে একসময় বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের সখ্য ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রচার সভায় মহারাজকে দেখা যেত। সেই সময় মহাজার সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ছিল খুবই খারাপ। বর্তমানে পরিস্থিতি অন্যরকম। গ্রেটার সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিজেপির মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের যেমন নিয়মিত মহারাজার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তেমনই তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, প্রেমানন্দ দাসকেও নিয়মিত মহারাজার বাড়িতে যাতায়াত করতে দেখা যায়। গ্রেটার সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের ভারতভূক্তি চুক্তি রূপায়ণের দাবি নিয়েই দিল্লিতে দরবার করেছেন মহারাজ। তাঁকে ওই বিষয়ে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে বহুবার। কিন্তু কাজ না হওয়ায় মহারাজ তা ভাল ভাবে নিচ্ছেন না। এ বার দিল্লি গিয়ে তিনি ওই বিষয়েই কথা বলবেন। তৃণমূল নেতা প্রেমানন্দ বলেন, “মহারাজ দিল্লি যেতেই পারেন। সেটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা এই অংশের উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। মুখ্যমন্ত্রী নানা প্রকল্পের কথা কোচবিহারে দাঁড়িয়ে বলেছেন। সে সময় মহারাজও মঞ্চে ছিলেন।”