— প্রতীকী চিত্র।
আর জি কর-কাণ্ডের পরে ‘হুমকি-প্রথা’ (থ্রেট কালচার) রুখতে মেডিক্যাল কলেজে তৈরি হয়েছিল তদন্ত কমিটি। সে তদন্ত-রিপোর্ট প্রকাশের আগেই কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের হস্টেলে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক ইন্টার্নকে মারধরের অভিযোগ উঠল। তাতে নাম জড়াল ‘হুমকি প্রথা’ জিইয়ে রাখায় বিশ্বাসীদের একাংশের। ঘটনায় আট সদস্যের কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাসপাতালের সুপার ও সহকারী অধ্যক্ষ (বর্তমানে অধ্যক্ষের দায়িত্বে) সৌরদীপ রায়। তিনি বলেন, “সাত দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সে হিসেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, এর আগে কোচবিহার মেডিক্যালে আর জি কর কাণ্ডে নাম জড়ানো প্রভাবশালী চিকিৎসক গোষ্ঠী ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ঘনিষ্ঠদের এক রকম ‘রমরমা’ ছিল। ‘লবি’র কথা শুনে চললে কলেজের পরীক্ষায় সুবিধা পাইয়ে দেওয়া, হস্টেলে পছন্দ মতো ঘর— মিলত বলে খবর। অভিযোগ, তাদের কথা না মানলে নানা রকম অসুবিধায়, হুমকির মুখে পড়তে হত সাধারণ পড়ুয়া ও চিকিৎসদের একাংশকে।
কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল ‘হুমকি প্রথার’ অস্তিত্ব মেনে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গড়েন। কমিটি ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অনলাইনে অভিযোগ জমা নেয়। তবে মাস দুয়েক কাটলেও তদন্ত-রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সে ব্যাপারে অভিযোগকারীদের মধ্যে ‘আক্রান্ত’ ইন্টার্নও রয়েছেন।
কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ওই ইন্টার্নের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হস্টেলে তাঁর ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে আর এক এক ইন্টার্ন তাঁকে মারধর করেন। সে ব্যাপারে অভিযোগ জানাতে তিনি থানায় যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে আর এক প্রস্ত হেনস্থা করা হয়। ঘটনায় যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদের অনেকে ‘হুমকি-প্রথা’ জিইয়ে রাখার সঙ্গে জড়িত। শেষে তিনি অভিযোগ জানান কলেজের সুপারের কাছে। শুক্রবার অবশ্য অভিযোগকারী ইন্টার্ন বলেন, ‘‘যা হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে মিটেছে।’’ যদিও এক অভিযুক্তের পাল্টা দাবি, ওই ইন্টার্নই বিনা প্ররোচনায় তাঁদের কয়েক জনকে ‘মারধর’ করেন। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল বলেন, “এমন ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে।” আগের তদন্ত-রিপোর্ট এত দিনেও জমা পড়ল না কেন জানতে চাওয়া হলে, কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, মাঝে পুজোর ছুটি পড়ায় সে কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। শীঘ্রই হবে।