Hospital

মানুষের পাশে থেকেই শান্তি পান আমিদুল

আমিদুল জানালেন, তিনি যে এলাকায় থাকেন, সেখানে অধিকাংশ মানুষই গরিব।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২১ ০৮:৪৩
Share:

সেবা: হাসপাতালে রোগীর পরিচর্যায় আমিদুল হক। নিজস্ব চিত্র

কখনও খাবার নিয়ে হাজির হচ্ছেন দুঃস্থ মানুষজনের পাশে। কখনও কারও রক্তের প্রয়োজন শুনেই ছুট দিচ্ছেন। তিনি আমিদুল হক। স্থানীয়রা বলছেন ‘মসিহা’। কোচবিহারের হরিণচওড়ায় তাঁর বাড়ি। মাছের ব্যবসা করেন। ইদের সময়ে নতুন জামাকাপড় তুলে দিয়েছেন গরিব বাসিন্দাদের হাতে। সেই সঙ্গেই পইপই করে বুঝিয়ে বলছেন, এই করোনার সময়ে কী করতে হবে। এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, বিপদে-আপদে পড়লে ছেলেটাকে ডাকলেই পাওয়া যায়। কখনও তাঁর মুখে না বলতে শোনেনি তাঁরা। আমিদুল অবশ্য বলেন, ‘‘তেমন কিছু কী এমন করতে পারি? আমি আমার স্বল্প ক্ষমতার মধ্যে চেষ্টাটুকু করি। তাতে শান্তি পাই। তবে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে অনেক মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের আমি কুর্নিশ জানাই।’’

Advertisement

আমিদুল জানালেন, তিনি যে এলাকায় থাকেন, সেখানে অধিকাংশ মানুষই গরিব। গত বছর লকডাউনের সময় থেকেই তাঁর মন চাইত মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আমিদুল জানান, সেই সময় নানা মানুষের নানা সমস্যা তিনি খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেন। বহু মানুষের আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়। কত মানুষ খাবার নিয়ে সমস্যায় পড়েন। ভবঘুরে, গরিব মানুষ আধপেটা খেয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। তাঁদের মুখে অন্ন তুলে দিতে পেরে, তিনি মানসিক শান্তি পেয়েছেন বলে জানালেন।

গত বছর লকডাউনের সময় রক্তের সঙ্কটও শুরু হয়। আমিদুলের কথায়, ‘‘আমার অনেক পরিচিত আত্মীয়রা রক্ত জোগাড় করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। আমি নিজে তখন চারবার রক্তদান করি। তারপর সোশ্যাল নেটওয়ার্কে রক্তদানের আবেদন করতে থাকি। বহু মানুষ তাতে সাড়া দেন।’’ এর পর আমিদুল ফুড এটিএমও চালু করেন। কোনওদিন দুপুরে, কখনও রাতে খাবারের প্যাকেট অসহায় মানুষের হাতে হাতে পৌঁছতে থাকেন তিনি। যা এখনও চলছে বলে জানালেন।

Advertisement

এ বছর ইদের আগে ১৫০ জন বাসিন্দার হাতে তিনি নতুন জামাকাপড়, মাস্ক তুলে দিয়েছেন তিনি। এইসব কাজ করতে তো অনেক টাকা লাগে? রসদ কোথায় পান? উত্তরে আমিদুল বললেন, ‘‘আমার কাজে বহু মানুষ সাহায্য করছেন। কেউ খাবার কিনে দিচ্ছেন, কেউ জামাকাপড়। আমি ঠিক জায়গয় কেবল পৌঁছে দিচ্ছি।’’

কোচবিহার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শুচিস্মিতা দেবশর্মা বলেন, ‘‘আমিদুল খুব ভাল কাজ করছেন। অনেক অসহায় মানুষের পাশে তিনি দাঁড়িয়েছেন। এই সময়ে এমন মানুষেদেরই তো প্রয়োজন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement