আতঙ্কের রাত। নিজস্ব চিত্র
এনআরসি আতঙ্ক রাতের ঘুম কেড়ে ডাকঘরের সামনে দাঁড় করিয়ে দিল বাসিন্দাদের। এমনই আশঙ্কা থেকে আধার কার্ড সংশোধন করতে সোমবার সন্ধ্যা থেকে বালুরঘাট শহরের প্রধান ডাকঘরের সামনে মানুষের ভিড় জমতে থাকে। লাইন দেন বাড়ির মহিলারাও। বৃষ্টি নামতে ফুটপাথের চায়ের দোকানের শেডে কোনও রকম মাথা বাঁচিয়ে সারা রাত কাটান। ফুটপাথে বসেই পুঁটলিতে বেঁধে আনা খাবার খেয়ে মঙ্গলবার ভোর থেকে লাইন দিলেন তপনের বাসিন্দা বৃদ্ধ গৌর দাস, গৃহবধূ মায়া বর্মনরা। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ ফর্ম জমা দিয়ে বৃদ্ধ গৌরবাবু জানান, ‘‘অসমে এনআরসিতে বহু মানুষ ঠিকানা হারিয়ে সঙ্কটে পড়েছেন। এ রাজ্যেও কখন কী হয়, তাই আধার কার্ডের বয়স এবং ঠিকানার ভুল সংশোধন করতে দু’দিন আগে এসে পিছনের সারিতে লাইন দিয়েছিলাম।’’
আধার কার্ডে শ্বশুরের নাম ভুল। সংশোধন করতে তপনের লস্করহাট নোয়াপাড়া থেকে ডাকঘরে হাজির হন গৃহবধূ মায়া বর্মণ। তিনিও সারারাত জেগে মঙ্গলবার সকালে ডাকঘর থেকে ফর্ম জমা দিলেন। কিন্তু তিনি জানান, ১৫ দিন পর ফের তাঁকে সংশোধনের ডেট দেওয়া হয়েছে।
ডাকঘর কর্তৃপক্ষের দাবি আধার কার্ড সংশোধন ও নতুন করার পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। ফলে এক দিনে ২৫ জনের বেশি আধার কার্ডের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। একবার ফর্ম জমা নেওয়ার পর উপভোক্তাদের কার্ড নিতে ১৫-২০ দিন পর আসতে বলা হচ্ছে। বালুরঘাট শহরে হাতে গোনা যে দু-তিনটি ব্যাঙ্কে আধার কার্ডের কাজ হচ্ছিল। সেটাও এখন বন্ধ বলে অভিযোগ। পুজোর পরে ওই কাজ হবে বলে ব্যাঙ্ক থেকে জানানো হয়েছে। জেলা ডাকঘর ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট রাজীব রঞ্জন বলেন, বালুরঘাট প্রধান ডাকঘরে আরও তিনটি কাউন্টার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মানুষের হয়রানি কমাতে দক্ষিণ দিনাজপুরে ১৪টি এবং উত্তর দিনাজুরে ১৩টি মোট ২৭টি নতুন কাউন্টার খোলা হবে।