অর্ধসমাপ্ত মন্দির। নিজস্ব চিত্র।
অনুদান মিললেও দু’বছর ধরে বন্ধ পুজো। বৈঠকে পুজো না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতেই রোষের মুখে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা পুজো কমিটির সভাপতি সাবিত্রী মিত্র। তাঁর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলেরই জেলা কো-অর্ডিনেটর তথা পুজো কমিটির সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ির অনুগামীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে অম্লান ঘনিষ্ঠ তিন যুবকের নামে ইংরেজবাজার থানায় পৃথক ভাবে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সাবিত্রী মিত্রের মেয়ে ও ভাসুর। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে অনুগামীদের হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অম্লান।
ইংরেজবাজার শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুড়াটুলি এলাকায় রয়েছে সদরঘাট সর্বজনীন দুগোৎসব কমিটি। দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে এলাকার এক স্থায়ী মন্দিরে পুজো হয়ে আসছে। মন্দিরের সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অর্ধেক কাজ হয়েছে মন্দির নির্মাণের। পুজো কমিটির সভাপতি সাবিত্রী মিত্র এবং সম্পাদক ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর তথা তৃণমূলের জেলার কোর কমিটির সদস্য অম্লান ভাদুড়ি। দুর্গা পুজোর জন্য রাজ্য সরকারের অনুদান পায় সদরঘাট সর্বজনীন দুগোৎসব কমিটিও। গত, বছরও সরকারি অনুদান ২৫ হাজার টাকা পেয়েছিল ক্লাব। কিন্তু পুজো হয়নি। এ বারও ৫০ হাজার টাকা মিলেছে। অথচ, এখনও পুজোর উদ্যোগ নেই। এমনকি, পরিত্যক্ত হয়ে রয়েছে মন্দিরও।
বুধবার পুজো নিয়ে বৈঠকে কেন পুজো হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাবিত্রী। তার পরেই রাতে অম্লানের একদল অনুগামী প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, সাবিত্রীর মেয়েকে যৌননিগ্রহ করা হয়। সাবিত্রীকে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে গ্রাম থেকে সাবিত্রীর অনুগামীরা এলাকায় ভিড় জমান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সামাল দেন সাবিত্রী। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে।
সাবিত্রী বলেন, “জন্মের পর থেকে এলাকায় পুজো দেখে আসছি। কখনও পুজো বন্ধ হয়েনি। তবে কয়েক বছর ধরে সরকারি অনুদান মিললেও পুজো হচ্ছে না। তা নিয়ে সরব হতেই এলাকার কিছু ছেলে আমার বাড়িতে চড়াও হয়। আমার মেয়ের সঙ্গে অভব্য আচারণ করে।’’ অম্লান বলেন, “মন্দিরের কাজ শেষ না হওয়ায় এলাকার যুবকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। যার জন্য যুবকেরা পুজো করতে চাইছেন না। তবে পুজো করার চেষ্টা চলছে। আর প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতে কোনও হামলা হয়নি।” বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, “শাসক দলের দুই হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীর কাজিয়ায় বন্ধ রয়েছে পুজো। এ দিকে, পুজোর নামে সরকারি অনুদান নেওয়া হচ্ছে।”