প্রতীকী ছবি।
ত্রাণের জিনিসপত্র বিলি হয়নি ঠিকমতো— এই ক্ষোভ জানিয়ে রবিবার ভরদুপুরে তালা ভেঙে ত্রাণ লুট হল চোপড়ার বিডিও অফিস থেকে। অভিযোগের আঙুল স্থানীয় বাসিন্দাদের দিকে। স্থানীদের আবার পাল্টা অভিযোগ, বিডিও-র ‘গাফিলতির’ জন্যই সময়মতো ত্রাণ বিলি হয়নি। আর তাতেই মানুষ খেপে গিয়েছে। ইসলামপুরের মহকুমাশাসক এই ঘটনার যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে নবান্ন সূত্রের খবর, বিষয়টির দিকে নজর রেখেছেন প্রশাসনের শীর্ষ নেতৃ্ত্ব। পুরো ঘটনার জন্য যিনি বা যাঁরা দায়ী, তাঁদের সম্পর্কে কঠোর অবস্থান নেওয়ারও ইঙ্গিত মিলেছে। বিডিও জুনায়েদ আহমেদের ফোন অবশ্য বন্ধ ছিল। তাই কোনও ভাবেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
গত কয়েক দিন ধরেই তুমুল বৃষ্টিতে জলমগ্ন চোপড়ার বিভিন্ন এলাকা। অনেক জায়গাতেই বিপন্ন মানুষ। অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে চোপড়ার বিডিও সম্প্রতি কিছু লোককে নিজের হাতে ত্রাণ দিয়েছিলেন। যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁরাই এ দিন হামলা চালান বলেই দাবি। ত্রিপল, চাল লুট হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বাসিন্দাদের কারও কারও দাবি, শনি ও রবিবার অফিস ছুটির ‘যুক্তি’ দেন বিডিও। এ দিকে আজ, সোমবার শিলিগুড়িতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগের দিনই এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন। নবান্নের শীর্ষ সূত্রেও জানানো হয়েছে, ত্রাণ সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় পৌঁছতে জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই কাজে অভিযোগ উঠলে আধিকারিকের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে।
চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানও বলেন, ‘‘মৃধা বস্তি এলাকায় বিডিও নিজের হাতে কিছু বাসিন্দাকে ত্রিপল দিয়েছেন। বাসিন্দারা ত্রিপলের দাবি করেন। কিছু বাসিন্দা বিডিও অফিসেও যান। কিন্তু বিডিও উপর থেকে নীচে পর্যন্ত নামেনি বলে শুনেছি। উনি নেমে কিছু মানুষকে ত্রিপল দিলে এমন হত না।’’ খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ইসলামপুরের মহকুমাশাসক অলিঙ্কৃতা পান্ডে বলেন, ‘‘বিডিওকে বলেছি লুটপাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে।’’
একই সঙ্গে বিপন্ন মানুষের জন্য চটজলদি ব্যবস্থা নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আজহার উদ্দিন জানান, জলমগ্ন পরিস্থিতির জন্য পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পাঁচ কুইন্টাল করে চাল, গম ও পলিথিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় যেখানে যা প্রয়োজন হবে জরুরি ভিত্তিতে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও সদস্যরা তা দেখে ব্যবস্থা নেবেন।