প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ব্যাঙ্ক ঋণ দেওয়ার কথা জানিয়েছিল তাদের করোনা প্যাকেজে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে ঋণ নিতে গেলে ঘুষ চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পোশাকে প্রিন্টের কাজ করেন এক ব্যবসায়ী। তিনি এই অভিযোগ এনেছেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে। জিতেন জানা নামে ওই ব্যবসায়ী তা নিয়ে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেছেন ওই উদ্যোগী। গত মঙ্গলবার পানিট্যাঙ্কি মোড় ফাঁড়িতে অভিযোগ জমা করেছেন। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারী অথর্ব বলেন, ‘‘অভিযোগ দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ চত্বরের ওই ব্যাঙ্কের শাখার ম্যানেজার মণীশ কুমার বলেন, ‘‘ইচ্ছে মতো কেউ কোনও অভিযোগ করতে পারেন। অভিযোগ ভিত্তিহীন। কিন্তু অভিযোগ তুলে প্রভাব খাটিয়ে ঋণ অনুমোদন করিয়ে নেবেন, সেটা কখনওই হয় না।’’ তাঁর দাবি, ব্যাঙ্কের যিনি ঋণ আবেদনকারীদের প্রকল্প পরিদর্শন করেন, তিনি অসুস্থ থাকায় এক কর্মীর সঙ্গে তিনি নিজেও ওই ব্যক্তির কারখানা দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে অনেক কিছু অসঙ্গতি নজরে এসেছে। কাজও বন্ধ রয়েছে বলে বুঝতে পারেন। তা ছাড়া কোভিড পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার কারবারিদের সাহায্য করতে যে প্রকল্পের কথা বলছে, এটি সেই প্রকল্প নয়। তবু কিছু বিষয় ঠিক করতে তাঁকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। অথচ তা না করে তিনি প্রভাব খাটিয়ে নানা জায়গা থেকে ফোন করিয়ে ঋণ অনুমোদনের চেষ্টা করছিলেন বলে দাবি ম্যানেজারের।
জেলা শিল্প কেন্দ্রের শিল্প উন্নয়ন আধিকারিক বিশ্বজিৎ গোস্বামী বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক কাকে ঋণ দেবে, সেটা তাদের বিবেচনার বিষয়। তবে যারা উদ্যোগী, তাদের আবেদন করতে সহায়তা করা হয়। ডিআইসি দফতর স্পনসর হিসেবে বা প্রকল্পের নথিভুক্ত করে সেটা ব্যাঙ্কের কাছে পাঠিয়ে থাকে।’’
জিতেন জানার কথায়, গত ২০ বছর ধরে টি-শার্ট, জার্সির মতো পোশাক প্রিন্টিংয়ের কাজ করছেন তিনি। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে এখনও সেই কাজ চলছে। এভাবে সময় এবং পরিশ্রম বেশি লাগে। করোনা পরিস্থিতিতে এবং বর্তমান প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে উন্নত আধুনিক প্রিন্টিংয়ের ব্যবস্থা করতে ঋণের জন্য আবেদন করেন। জেলা শিল্প কেন্দ্রের পরামর্শ মেনে সমস্ত কিছু করেছেন। গত ১৭ মে ডিআইসি’র মাধ্যমে অনলাইনে ১০ লক্ষ টাকা ঋণের জন্য শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ চত্বরে থাকা ব্যাঙ্কের ওই শাখায় আবেদন করেন। জিতেনবাবুর অভিযোগ, ‘‘১ অক্টোবর পরিদর্শনের সময় ম্যানেজার বলেন, এই স্কিমে কেন আবেদন করেছেন। তাঁকে জানাই এই প্রকল্পে সরকারি অনুদান রয়েছে। তখন তিনি দাবি করেন, ওই অনুদানের অর্ধেক টাকা তাঁকে দিতে হবে। আমি রাজি না-হওয়ায় তিনি ঋণ অনুমোদন করছেন না।’’