TMC

মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি নিয়ে ব্যবস্থা কবে, প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরেই

প্রশাসন সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে নকশালবাড়িতে কারখানা গড়তে গিয়ে শাসক দলের এক নেতার কোপের মুখে পড়েন এক ব্যবসায়ী।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ০৭:১৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ও শাসক দলের দুই নেতার গ্রেফতারে পরে, আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন, ডাবগ্রাম বা ফুলবাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে মাটিগাড়া থেকে নকশালবাড়ি এলাকাও। তার খোঁজখবর নিয়ে কবে ব্যবস্থা হবে, তা পরিষ্কার নয়। অভিযোগ, জমি দখলের রাজনীতির অভিযোগ এই দুই ব্লকেও বছরের পরে বছর চলছে৷ এই এলাকাতেও ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

Advertisement

তৃণমূলের পুরনো নেতাদের কয়েক জন বলেন, ‘‘জমি নিয়ে ঝামেলার নিরিখে নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি থেকে মাটিগাড়া কোনও ভাবেই ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির থেকে কম নয়। ব্লকে কান পাতলেই অভিযোগ শোনা যায়। বছরের পরে বছর এমনটা হলেও, ব্যবস্থা হয়নি।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে নকশালবাড়িতে কারখানা গড়তে গিয়ে শাসক দলের এক নেতার কোপের মুখে পড়েন এক ব্যবসায়ী। অভিযোগ, সেই নেতা ‘আর্থমুভার’ যন্ত্র দিয়ে গেট ভেঙে জমি দখল করার চেষ্টা করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে সোজা অভিযোগ করেছিলেন ওই ব্যবসায়ী। পরে, পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা বদল হয়। তার পরেও অবশ্য পরিস্থিতি বদল হয়নি। পানিট্যাঙ্কি, খড়িবাড়ি থেকে নকশালবাড়ি, মাটিগাড়া, শিবমন্দির-সহ বহু এলাকায় জমির অবৈধ কারবার অবাধে চলছে বলে অভিযোগ। বেশ কিছু এলাকায় চা বাগানের জমিকে ঘিরে নানা অভিযোগ সামনে এসেছে।

Advertisement

শিলিগুড়ির মহকুমায় অনেকটাই গ্রামীণ এলাকা রয়েছে। তৃণমূলের নেতাদের একাংশের দাবি, চারটি ব্লকে জমির কারবার ‘রমরমিয়ে’ চলছে। ব্যক্তির জমি দখল, নদীর চর দখল, খাসজমি দখল, কম টাকা দিয়ে জমি হাতিয়ে নিয়ে বিক্রির ব্যবসা চলছে ‘পুরোদমে’। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাসক দলের হাত থাকার অভিযোগ থাকছে। কিন্তু প্রশাসনিক স্তরে ব্যবস্থা হয়নি।

গত বিধানসভা থেকে লোকসভা, একমাত্র মহকুমা পরিষদের ভোট ছাড়া, প্রতি ভোটে এলাকায় রাজ্যের শাসক দল হারছে। বাসিন্দাদের কাছে বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা সরকার পৌঁছে দিলেও তৃণমূলের প্রতি মানুষের চিন্তা-ভাবনায় বদল হচ্ছে না। কারণ, জমির অবৈধ কারবারে শাসক দলের একাংশের হাত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অনেক নেতার নাম মাঝেমধ্যে শোনা যায়। দল বা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

শুধু জমি নয়, শিবমন্দির, বাগডোগরা এলাকায় প্রোমোটারদের সঙ্গে নেতাদের একাংশের যোগসাজশের অভিযোগও সামনে আসছে। বিভিন্ন ভাবে জমি ‘হাতিয়ে’ সেখানে বাণিজ্যিক ভবন বা আবাসন তৈরির ব্যবসাও চলছে। সেখানে স্থানীয় নেতাদের অনেকের যোগের অভিযোগও সামনে এসেছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে বার বার ঠিকাদারি, প্রোমোটারি, জমির ব্যবসা থেকে দূরে থাকার কথা বলা হলেও, শিলিগুড়ির গ্রামীণ এলাকার ব্লকগুলিতে তেমন বহু চরিত্র দলে মজুত বলে অভিযো‌গ।

তৃণমূলের এক জেলা স্তরের নেতার ক্ষোভ, মুখ্যমন্ত্রী বারবার সতর্ক করলেও, খড়িবাড়ি, নকশালবাড়ি এলাকায় পুলিশের একাংশের সঙ্গেও শাসক দলের লোকজনের নিয়মিত ওঠাবসা রয়েছে। রাত হলে থানা এলাকায় গেলেই তা টের পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে সেখানে জমির লেনদেনকে ঘিরে ‘বৈঠক, আলোচনা’ চলে। সে সব বন্ধ করা না গেলে, মানুষের কাছে ঠিক বার্তা যাবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement