আবাস প্রকল্পে নাম দোতলা বাড়ির মালিক বাবলু বিশ্বাসের। নিজস্ব চিত্র
বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রাথমিক তালিকায় নাম রয়েছে তিন ভাইয়ের। তাঁদের দিদি তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। অভিযোগ, তাঁর তিন ভাই ছাড়াও তালিকায় রয়েছে প্রধানের বোন ও ভাগ্নের ছেলেদের নামও। তালিকায় রয়েছে প্রাক্তন উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতার নামও। তাঁর মা ও ভাইও রয়েছেন সেই প্রকল্পের তালিকায়।
অভিযোগ, জনপ্রতিনিধি ও তাঁদের পরিজনদের পাশাপাশি তালিকায় নাম রয়েছে ব্লক অফিসের অস্থায়ী কর্মী থেকে শুরু করে বহুতল বাড়ির মালিকেরও। গরিব মানুষের ঘর প্রকল্পের তালিকায় এমন সব নাম প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়েছে মালদহের হবিবপুর ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত আইহোয়।
হবিবপুর ব্লকের আইহো গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান অনীতা সাহা। কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হয়ে পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েই প্রধান হন তিনি। এলাকাবাসী একাংশের অভিযোগ, প্রধানকে নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁরই গ্রামের বাসিন্দা এক সময় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা ব্লকের তৃণমূল নেতা প্রতাপ দাস। তিনিও পঞ্চায়েত ভোটের আগে কংগ্রেসে ছিলেন। তাঁর আসন সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় অনীতাকে সেখানে প্রার্থী করেন তিনি।
আইহোর রতিরাম পাড়া গ্রামে বাড়ি ব্লক অফিসের অস্থায়ী কর্মী মুকুল দাসের। অভিযোগ, সরকারি ঘর প্রকল্পে মুকুল ও তাঁর স্ত্রী করুণাবালার নাম রয়েছে। পাকা বাড়ি রয়েছে মুকুলের। করুণাবালা বলেন, “আমার স্বামী ব্লকে এবং আমি পঞ্চায়েতে আবেদন করেছিলাম। তাই দু’জনের নাম এসেছে।”
মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কের ধারে আইহোর বক্সিনগর গ্রামে দোতলা বাড়ি ব্যবসায়ী বাবলু বিশ্বাসের। অভিযোগ, তাঁরও নাম রয়েছে ঘর প্রকল্পে। পঞ্চায়েতের বিরোধী নেতা কংগ্রেসের দীপক সাহা বলেন, “সরকারি প্রকল্পের ঘর বিলি নিয়ে চলছে স্বজনপোষণ।” অনীতা বলেন, “আমার ভাইদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। আবেদন করেছিল, যোগ্যতা অনুযায়ীও পেয়েছে। স্বজনপোষনের অভিযোগ ঠিক নয়।” তবে তালিকায় তৃণমূল নেতার নাম কেন? তিনি বলেন, “সরকারি প্রকল্পের ঘর দুই ভাবে জমা পড়েছিল। কে কোথায় আবেদন জমা দিয়েছিলেন তা আমার জানা নেই।” প্রতাপের দাবি, “আমি কোথাও আবেদন করিনি। কেন আমার নাম তালিকায় রয়েছে বুঝতে পারছি না। আর মা বয়স্ক, ভাইয়ের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়।” হবিবপুর ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানা বলেন, পঞ্চায়েতের ঘর নিয়ে একাধিক অভিযোগ পাচ্ছি। যোগ্য উপভোক্তারাই ঘর পাবেন। চূড়ান্ত তালিকায় সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”