১৪৪ ধারা জারি থাকার পরেও মনোনয়ন কেন্দ্রের সামনে উপচে পড়া ভিড় জলপাইগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
বিধিভঙ্গের ‘ওরা’, বিধিভঙ্গের ‘আমরা’ও! মনোনয়ন কেন্দ্রের ১০০ মিটার জুড়ে থাকা ১৪৪ ধারার বিধিনিষেধ ভাঙল শাসক, ভাঙল বিরোধীরও। বিধিভঙ্গ দেখে কোথাও পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করল, কোথাও নীরব দর্শক হয়ে রইল। শাসক দলের মিছিল স্লোগান তুলে বিধি ভেঙে পৌঁছে গেল মনোনয়ন কেন্দ্র তথা ব্লক অফিসের দোরগোড়ায়, কোথাও আবার বিরোধী দলের পতাকা লাগানো গাড়ি থেকে নামলেন দলে দলে সমর্থক।
জলপাইগুড়ি সদর ব্লক অফিসের দরজায় এ দিন কয়েকশো সমর্থক নিয়ে এসে পৌঁছয় তৃণমূলের মিছিল। বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে, এত দিন পুলিশ দরজার সামনে কাউকে দাঁড়াতেই দেয়নি। অথচ তৃণমূলের মিছিল এসেছে অবাধে। এ দিন মিছিলের নেতৃত্ব দেওয়া জেলা তৃণমূলের এসসি-এসটি সেলের সভাপতি কৃষ্ণ দাস বলেন, “মিছিল এসে দাঁড়াবে কোথায়, এত লোক এসেছে। তবে কেউ বেশি ক্ষণ ব্লক অফিসের সামনে থাকেননি। গত কয়েক দিন তো বিরোধীরাও ১৪৪ ধারা ভেঙে জমায়েত করেছিল।”
এই জেলারই রাজগঞ্জের ব্লক অফিসেও ১৪৪ ধারা ভেঙেই মনোনয়ন জমা করতে দেখা গিয়েছে। পাহাড়ে বিজনবাড়িতে বিজেপির মনোনয়ন জমার সময় ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতা বিজেপি প্রার্থী এবং তাঁর নামের প্রস্তাবককে হেনস্তা করে বলে অভিযোগ। দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে দাবি। প্রশাসনের তরফে অবশ্য কেউ কিছু বলতে চাননি।
কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকে নিয়ম ভেঙে নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে বিডিও অফিসের ভেতরে ঢুকে পড়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘আমি এই ব্লকের ভোটার। আমার দাদা পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হবেন। খোঁজ নিতে এসেছি। ভোটার বিডিও-র সঙ্গে কথা বলতেই পারেন। আমিও বলেছি।’’
অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আলিপুরদুয়ার-১ ব্লক অফিসের সামনে বারবার করে ভিড় জমান একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ বারবার করে সেই ভিড় সরিয়ে দেয়। কিন্তু খানিকক্ষণের মধ্যেই আবার সেখানে ভিড় জমে যায়।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্ৰী উদয়ন গুহ বলেন, “সর্বত্র শান্তিপূর্ণ ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ হয়েছে। পুলিশ কাউকেই অযথা ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। ১৪৪ ধারা ভঙ্গের কোনও বিষয় নেই।’’
দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, “শাসক দল এবং তাঁদের সঙ্গীরা ১৪৪ ধারা ক্রমাগত ভাঙছে। আমি লিখিত ভাবে রাজ্যের নির্বাচন কমিশনারকে অভিযোগ জানিয়েছি।”