বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলবেন রিচা। — নিজস্ব চিত্র।
এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী রিচা। রিচা ঘোষ। ছ’মাস আগে, স্কুলে গিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনার যাবতীয় বইপত্র, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম জোগাড় করে রেখেছিল। ১৪ মার্চ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শুরু। ও দিকে, শনিবার থেকে শুরু হয়েছে মহিলা আইপিএল। আজ, রবিবার রিচাদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু মুখোমুখি হচ্ছে দিল্লি ক্যাপিটালের। মুম্বইয়ের ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে। তাই অনন্যোপায় দেশের মহিলা ক্রিকেট দলের অন্যতম ব্যস্ত ও দামি এই তারকা খেলোয়াড়। পরীক্ষার ভাবনা শিকেয় তুলে ক্রিকেট মহাযজ্ঞের প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাকে।
টিভির পর্দায় তার খেলা দেখার জন্যে মুখিয়ে রয়েছেন শিলিগুড়ির ক্রিকেটপ্রেমীরাও। উচ্চ মাধ্যমিক দিতে না পারলেও মাঠে তার সাফল্য প্রার্থনা করেছেন স্কুল কর্তপক্ষ। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কল্যাণকুমার দাস বলেন, ‘‘ওর সঙ্গে দেখা নেই অনেক দিন। ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে ওকে থাকতে হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক দিতে চাইলে যাতে সমস্যা না হয় সেই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ওর খেলা রয়েছে। এ বার পরীক্ষা দিতে পারবে না, বুঝতে পারছি।’’শনিবার সকালে বাগডোগরা থেকে মুম্বই রওনা হয়েছেন বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ, মেয়ের পাশে থাকতে। শিলিগুড়ি থেকে রওনা হওয়ার আগে বাড়িতে বসে তিনি জানালেন, মেয়ে পরীক্ষা দিতে পারছে না। ডব্লিউপিএলে দলের অন্যতম ক্রিকেটার হিসাবে ব্যস্ত থাকতেহবে রিচাকে।
রিচার খেলা নিয়ে উৎসাহী শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব কুন্তল গোস্বামী থেকে ক্রিকেট সচিব মনোজ বর্মা সকলেই। ক্রীড়া পরিষদের সচিব বলেন, ‘‘রিচার খেলা নিয়ে আমরা খুবই উৎসাহী। ও প্রতিটি খেলায় নিজের পারফরম্যান্সের ছাপ রাখছে। মহিলাদের এই ডব্লিউপিএলেও ও ভাল কিছু করবে বলেই আমরা দৃঢ় বিশ্বাসী।’’ উৎসাহীদের বক্তব্য, গত বছর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে রিচার ২৬ বলে ৫২ রানের ইনিংস অনেকেই মনে রাখবেন। তার খেলার ধার দেখেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু তাকে এক কোটি ৯০ লক্ষ টাকা দিচ্ছে। যা ভারতীয় মহিলা দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কউরের থেকেও বেশি। স্মৃতি মান্ধানার অধিনায়কত্বে বেঙ্গালুরু দল খেলবে ডব্লিউপিএল।
পাড়ার মেয়ে রিচার খেলা নিয়ে এর আগে প্রশংসা করেছেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবও। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পর রিচা শহরে ফিরলে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন মেয়র। ডব্লিউপিএল-এও সে মেয়ের খেলা নিয়ে উৎসাহী তিনিও। ক্রিকেট সচিবের কথায়, ‘‘এত দিন ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের হয়ে রিচার খেলা দেখেছি। ডব্লিউপিএল-এরে পর রিচা আরও বেশি পরিণত হবে। আমাদের যে মেয়েরা ক্রিকেট খেলছে, তাদের চোখে রিচা এখন রোল মডেল।’’