অজয় এডওয়ার্ড। —ফাইল চিত্র।
সিকিমের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছে রাজ্য পর্যটনেও৷ দার্জিলিং ও কালিম্পঙের পুজোর পর্যটন, বিপর্যয়ের জেরে একেবারেই আশানুরূপ হয়নি৷ এর সবচেয়ে বড় কারণ, উত্তর সিকিম বন্ধ। ১৭ দিন টানা বন্ধ ছিল সিকিম, কালিম্পঙে যাতায়াতকারী লাইফলাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এ বার দীপাবলির মরসুম কেমন যাবে, তা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী ও রাজ্য সরকারকে পর্যটন শিল্পের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করে চিঠি দিলেন দার্জিলিঙের হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড। গত সপ্তমীতে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ সদস্য হিসাবে তিনি চিঠি দিয়েছেন।
একই সঙ্গে বিভিন্ন পর্যটন, হোটল, পরিবহণ সংগঠনকেও চিঠি দিয়ে দাবি নিয়ে সবর হতে বলেছেন অজয়। উল্লেখ্য, রাজনৈতিক দল, জিটিএ সদস্য ছাড়াও অজয় দার্জিলিঙের একটি বিখ্যাত রেস্তোরাঁর মালিক। সেখানে প্রতিটি পর্যটন মরসুমে ভিড় উপচে পড়ে। এ বারও পুজোর দিনগুলিতে তা হলেও অন্য সময় খানিকটা কমে। অজয় বলেছেন, ‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে এই অঞ্চল বিপর্যস্ত তা চাউর হয়েছে। এটা যে ঠিক নয়, তা পাল্টা প্রচার করতে হবে। দেশ বিদেশের লোকজনের কাছে দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমকে আবার তুলে ধরতে হবে। এর জন্য কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের প্রচার, আর্থিক সাহায্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্টপক্ষদের এগিয়ে আসতে হবে।’’
করানোর সংক্রমণের ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সাল, পুজোর মরসুমে তেমন সাড়া না মিললেও ২০২২ সালে পাহাড়ে পুজোর সময় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। একই অবস্থা ছিল ডুয়ার্সেও। তাই পর্যটন নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করে সরকারও। কালিম্পং ও দার্জিলিং শহরটা না ভেবে জেলার আর একটি অংশকে জনপ্রিয় করে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এতে অগস্ট মাস থেকে বুকিং ভালই শুরু হয়েছে। পুজোর পর্যটনের রমরমার কথাই ভাবা হয়। তবে করোনার ঘরবন্দি থাকার পরে, যে ভাবে গত বছর মানুষ পুজোর সময় বার হন তা এ বার কিছুটা কম হয়েছে।
গত ৪ অক্টোবর সিকিমের লোনাক লেকের হড়পা বাণে উত্তর সিকিম এবং কালিম্পঙের তিস্তা সংলগ্ন এলাকা পুরোপুরি বিপর্যস্ত। অনেকে মারা গিয়েছেন। অনেকের এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। সিকিম, কালিম্পঙের পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে দার্জিলিঙেও। কারণ, বেশিরভাগ ভিন্ রাজ্যের পর্যটক দার্জিলিং ও কালিম্পং মিলিয়ে ঘুরতে আসেন। আবার অনেকে সিকিমকে দার্জিলিং বা কালিম্পঙের সঙ্গে জুড়ে আসেন। এ রাজ্যের পর্যটকেরাও জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায়, পুজোর মুখে বুকিং কেউ বাতিল করেছেন, কেউ নানা আশঙ্কায় বুকিং পিছিয়ে নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ সিকিমের বদলে চলে গিয়েছেন নেপাল বা ভুটানে। পুজোর কটা দিন ম্যাল চৌরাস্তা, হোটেলে লোক থাকলেও একাদশী থেকেই পাহাড় প্রায় ফাঁকা হতে শুরু করেছে। জিটিএ প্রধান অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘জাতীয় সড়ক খুলেছে। আশা করা যায়, দীপাবলির মধ্যে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে।’’
আর হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সিকিমের লড়াই করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। পরিস্থিতি বদল হচ্ছে। তা প্রচারের মাধ্যমে রাখতে হবে।’’