অজয় এডওয়ার্ড। — ফাইল চিত্র।
বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পরে এ বার হামরো পার্টি। জিটিএ-র পাহাড়ে কাজ করার ক্ষমতাই নেই বলে অভিযোগ করলেন অজয় এডওয়ার্ড। তাঁর দাবি, জিটিএ-কে সব কাজের জন্য রাজ্য সরকারের উপর নির্ভরশীল হতে হয় বলেই পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের শাসনব্যবস্থা প্রয়োজন।
রবিবার জিএনএলএফ প্রধান সুবাস ঘিসিংয়ের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হয় মিরিকের মঞ্জু চা-বাগান এলাকায়। সেখানে প্রয়াত নেতাকে শ্রদ্ধা জানান অজয়। যদিও তাঁর পুরনো দল এবং নেতা মন ঘিসিংয়ের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি। এই মিরিকেই সুবাস ঘিসিংয়ের স্মৃতিসৌধ তৈরি হচ্ছে। অজয় বলেন, ‘‘প্রয়াত নেতা সুবাস ঘিসিং আমাদের জাতির গর্ব। সেখানে আজ পাহাড়ের কী হাল! জিটিএ-র নিজের কোনও ক্ষমতা নেই। রাস্তার কাজ, নার্সের চাকরিও দিতে পারে না। সব কিছুর জন্য রাজ্যের দিকে তাকাতে হয়। এতে কী লাভ!’’
গত সপ্তাহেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি ঘোষণা করেন, তাঁরা জিটিএ চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছেন। ২০১১ সালে কেন্দ্র-রাজ্যের সঙ্গে মোর্চার চুক্তির পরেই জিটিএ গঠিত হয়। সে চুক্তি আজ জিটিএ আইনে পরিণত হয়েছে। তাই চুক্তি থেকে সরে এলেও আইনি কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু জিটিএ ব্যর্থ বলে প্রচার পুরোদমে শুরু হয়েছে পাহাড়ে। সেখানে মোর্চার পাশে এ বার হামরো পার্টি।
গত দু’মাস ধরে বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ডেরা এক সঙ্গেই রাজনৈতিক পথ চলছেন। সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিনয় তামাং, প্রদীপ প্রধানের মতো তৃণমূল শিবির ঘুরে আসা নেতারা। সবাই মিলে মঞ্চ গড়ে গোর্খাল্যান্ড আদায়ের জন্য জাতীয় কমিটিও গড়েছেন। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমে কমিটির কর্মসূচি এবং দায়িত্বপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা হওয়ার কথা। পাহাড়ের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, এক সঙ্গে জোট বাঁধা নেতারা একই সুরে কথা বলবেন, এটাই স্বাভাবিক।
এরই মধ্যে রবিবার দুপুরে সপার্ষদ কলকাতা গিয়েছেন জিটিএ চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপা। আজ, সোমবার দুপুরে অনীতের সঙ্গে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের কথা রয়েছে। জিটিএ ভোটের আগে গুরুং ভোট প্রত্যাহারের দাবিতে অনশন শুরু করেছিলেন। যদিও রাজ্য তাতে সাড়া দেয়নি। তিনি অসুস্থ হয়ে সিকিমে চিকিৎসার জন্য চলে যান। হামরো পার্টি জিটিএ-র বিরোধিতা করলেও ভোটে লড়াই করে। অজয় নিজেও একজন জিটিএ সদস্য। এ দিন অনীত বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য উন্নয়ন এবং পাহাড়ের শান্তি। এটা নষ্ট করতে আমরা দেব না। আসলে, জোটবদ্ধরা সাংগঠনিক ভাবে আমাদের চেয়ে পিছিয়ে পড়েও তা মানতে পারছে না। এখন ওঁরা আমাদের ভাঙতে নেমেছেন।’’
তিনি জানান, কলকাতায় বৈঠকে পাহাড়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, উন্নয়ন, বিভিন্ন দফতরকে শক্তিশালী করা এবং পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বিরোধীদের প্রসঙ্গে অনীতের বক্তব্য, ‘‘ওঁরা একে অন্যের বিরুদ্ধে এক সময় লড়েছেন। পাহাড়ের কেউ কেউ কী কী করেছেন, তা পাহাড়বাসী ২০১৭ সালে দেখেছেন। এখন স্বার্থ দেখেই ওঁরা এক সঙ্গে। এমন জোটের কে কী বলছেন, তাতে পাহাড়ের কিছু হবে না।’’