মঙ্গলবার মাথাভাঙার কলেজ ময়দানে অভিষেকের সভার পর টিশার্ট বিতরণ হচ্ছিল। সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে আবার বিশৃঙ্খলা। এ বার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পর টিশার্ট বিতরণ নিয়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারামারি হল। ছেঁড়া হল বিতরণ হওয়া টিশার্ট। ঘটনাস্থল কোচবিহারের মাথাভাঙা।
মঙ্গলবার মাথাভাঙার কলেজ ময়দানে অভিষেকের সভার পর টিশার্ট বিতরণ হচ্ছিল। সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। টিশার্ট নেওয়ার হুড়োহুড়িতে এক এক জনের পরনের পোশাক ছিঁড়ে নেওয়ার ছবি দেখা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসে পুলিশ।
মঙ্গলবার সাহেবগঞ্জের সভা শেষে সিতাই গোঁসানিমারি হাই স্কুলের মাঠে সভা করতে যান অভিষেক। তবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পরে তিনি মঞ্চে উপস্থিত হন তিনি। তাঁর মিনিট কুড়ির ভাষণের শেষাংশে অভিষেক জানান, মঞ্চে ব্যালট বাক্স রেখে যাচ্ছেন। উপস্থিত তৃণমূল নেতাকর্মী এবং সমর্থকেরা যেন নিজেদের প্রার্থী বাছাই অভিযান শুরু করেন এবং তাঁদের মতামত জানান। কিন্তু তিনি সভাস্থল ছেড়ে পরের সভাস্থল শীতলখুচির উদ্দেশে রওনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোট দেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়। একসঙ্গে সবাই ভোট দিতে উঠে যান মঞ্চে। এক পক্ষ ব্যালট বাক্স নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করে। অন্য পক্ষ ভোট না দিতে পারার আশঙ্কায় ব্যালট কাগজ ছিঁড়তে শুরু করে। শুরু হয় মারামারি এবং ধাক্কাধাক্কি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ঠেলেঠুলে তৃণমূল কর্মী এবং সমর্থকদের মঞ্চ থেকে নীচে নামান। কিন্তু পুলিশের সামনে হাতাহাতি শুরু হয় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর। ওই ঘটনায় অভিষেক জানান অত্যুৎসাহীরা ভোট দিতে গিয়ে ব্যালট বাক্স ভেঙে ফেলেছেন। আবার এই ঘটনায় তিনি নেতাদেরও সাবধান করেন। বলেন, ‘‘যদি কেউ ভাবেন, গায়ের জোরে, ব্যালট বাক্স ভেঙে নিজেদের নাম ঢুকিয়ে প্রার্থী হবেন, তাহলে তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। কারণ, পাহারাদারের নাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি এই কারণেই তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ শুরু করেছি।’’ এর পর তিনি সিতাইয়ের বিধায়ক, জেলা সভাপতিকে নির্দেশ ওই স্থানে বুধবার আবার ভোট হবে। তার রিপোর্টও তাঁকে দিতে হবে বলে জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এ-ও জানান, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রার্থী বাছাই অভিযানের ভোট হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার থেকে অভিষেকের ৬০ দিনের কর্মসূচি সাজিয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে ওই কর্মসূচি শুরু হয়েছে কোচবিহার থেকে। ‘জনসংযোগ যাত্রা’র শুরুতে অভিষেক জানান, তিনি ভাল মানুষের খোঁজে পথে নামছেন। সন্ত্রাসবিহীন ভোট করতে হলে চাই ‘ভাল প্রার্থী’। মানুষকেই নেতা বেছে নেওয়ার ভার দিচ্ছেন তাঁরা। মানুষের মত জানার পরই পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাই করবে তৃণমূল। এমন একটি কর্মসূচি সারা ভারতে অভিনব বলে দাবি করেন অভিষেক। কিন্তু কর্মসূচির শুরুতেই বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটল দুই জায়গায়।