খুনের পর ট্রেন ধরে ভিনরাজ্যে রওনা দেন স্বামী। প্রতীকী ছবি।
ধারাল অস্ত্র দিয়ে নৃশংস ভাবে স্ত্রীকে খুন করেন স্বামী। এর পর পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ভিন রাজ্যে আত্মগোপনের পরিকল্পনা করেন তিনি। সেই ছকেই ট্রেনে চেপে রওনাও দিয়েছিলেন। কিন্তু মাঝপথে হঠাৎ অপরাধবোধ হয়। অনুতাপে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন স্বামীও।
শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ মালদহের শ্রীপুর রেলস্টেশনের ৫০০ মিটার দূরে এক ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর দেওয়া হয় রেল পুলিশকে। ঘটনাস্থলে রেল পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। স্থানীয় সামসি পুলিশ ফাঁড়িতে বিষয়টি জানানো হয়। তার পরেই জানা যায় মৃতের পরিচয়।
শনিবার সাত সকালে মালদহ সামসি নতুন কান্ডারণ এলাকায় এক গৃহবধূকে ধারালো অস্ত্রের কোপ দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে স্বামীর বিরুদ্ধে। মৃতার নাম শুকতারা বিবি। স্ত্রীকে খুন করার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী সেরাজুল হক পলাতক ছিলেন। দিনভর তাঁর খোঁজে তল্লাশি করেও কোনও হদিশ পাওয়া যায় নি। এই ঘটনার ঠিক ৩৬ ঘণ্টার পর অভিযুক্ত সিরাজুলকে পাওয়া গেল। তবে মৃত অবস্থায়। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।
মালদহ সামসি শ্রীপুর স্টেশন থেকে ৫০০ মিটার দূরে সিরাজুলের দেহ উদ্ধার হয়। চলন্ত ট্রেন থেকে রেল লাইনে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুকতারা ও সিরাজুলের তিন ছেলে এবং এক মেয়ে। বড় ছেলে কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। বর্তমানে সিরাজুল কর্মহীন। সেই কারণে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর অশান্তি লেগেই থাকত। তাঁদের মেয়ের কাছ থেকে এলাকাবাসী জানতে পারেন তাঁর মাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছেন বাবা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ তদন্তে নেমে সিরাজুলের কোনও খোঁজ পাচ্ছিল না। অবশেষে রেললাইনে সিরাজুলের মৃতদেহ উদ্ধারের পর তদন্তকারী পুলিশকর্তাদের প্রাথমিক অনুমান, অপরাধবোধ ও অনুতাপ থেকে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।