অকুস্থলে: তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
রবিবার সকালে ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা হল। গুরুতর আহত সেই ব্যবসায়ী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সোমবার রাত পর্যন্ত কোনও দুষ্কৃতী ধরা পড়েনি। তাই এ ব্যাপারে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে এ দিন বিকেলে রায়গঞ্জে বিক্ষোভ দেখাল জেলার ব্যবসায়ীদের দু’টি সংগঠন। বিক্ষোভ দেখাল জেলা কংগ্রেসও।
এ দিন বিকালে পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের শতাধিক সদস্য রায়গঞ্জ শহরের রাসবিহারী মার্কেট থেকে শিলিগুড়ি মোড় পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করেন। এরপর আন্দোলনকারীরা কিছুক্ষণ শিলিগুড়ি মোড় এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। একই সময়ে শহরের মোহনবাটী এলাকায় সংগঠনের কার্যালয়ে বৈঠক করে আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করেন রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা। পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর কুণ্ডুর বক্তব্য, পুলিশের চরম নিষ্ক্রিয়তার জেরে দুষ্কৃতীরা থানা থেকে ৫০০ মিটার দূরে বাড়িতে ঢুকে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও গুলি করে খুনের চেষ্টা করেছে। এর আগে ৭ অক্টোবর করণদিঘিতে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী সুবেশ দাসের দোকানে ঢুকে দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে খুন করে। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ অবিলম্বে দু’টি ঘটনায় জড়িত সমস্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার ও জেলা জুড়ে ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করলে ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের দফতর ঘেরাও করতে বাধ্য হবেন।’’
রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ীর অভিযোগ, জেলার বিহার সীমানার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের কোনও নজরদারি নেই। সেই সুযোগে বিহার থেকে অবাধে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুষ্কৃতীরা জেলায় ঢুকছে। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের চরম নিষ্ক্রিয়তার জেরেই জেলায় পরপর ব্যবসায়ীদের উপর পরিকল্পিত হামলার ঘটনা ঘটছে। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার ও জেলার ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দাদের নিরাপত্তার দাবিতে মঙ্গলবার সংগঠনের সদস্যরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পথসভা করে বিক্ষোভ দেখাবেন।’’
একই অভিযোগ তুলে এ দিন রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেয় কংগ্রেস। রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের অভিযোগ, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জেরে জেলার আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। জেলা জুড়ে ব্যবসায়ীদের উপর হামলা, খুনের পাশাপাশি সংঘর্ষ, যৌন নিগ্রহ, নেশার কারবার ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। মোহিতের কথায়, ‘‘দলের তরফে পুলিশ সুপারকে বিষয়গুলি জানানো হয়েছে। অবিলম্বে সমস্ত ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার, জেলার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের নিরাপত্তা এবং জেলায় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করা না হলে দলের তরফে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।’’
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে যে কেউ যা কিছু অভিযোগ করতে পারেন। করণদিঘিতে ব্যবসায়ীকে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রায়গঞ্জে ব্যবসায়ীর উপর হামলার ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’’