আলোচনা: উত্তরকন্যায় চলছে চার লেন সংক্রান্ত বৈঠক। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
প্রায় দুই দশক অপেক্ষায় কেটেছে। অবশেষে চালু হতে চলেছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর বাইপাস। আগামী ৩১ অক্টোবর চালু হবে সেটি। শুক্রবার দুপুরে উত্তরকন্যায় ইস্ট ওয়েস্ট করিডরের উত্তরবঙ্গের অংশ নিয়ে মন্ত্রী গৌতম দেবের নেতৃত্বে একটি বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাইপাস চালু হলে শিলিগুড়ি কিংবা রায়গঞ্জের দিকে যেতে হলে ইসলামপুর শহরে ঢোকার প্রয়োজন হবে না। কাটবে শহরের তীব্র যানজট।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ওই চারলেনের রাস্তা নিয়ে জটিলতা কাটাতে পরপর বৈঠক শুরু হয়েছে। ১৩ অগস্ট শিলিগুড়িতে একটি বৈঠকের পর এ দিন উত্তরকন্যায় বৈঠক হয়েছে। সেখানে মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের প্রজেক্ট ডিরেক্টর সঞ্জীব কুমার শর্মা এবং একাধিক উচ্চ পর্যায়ের অফিসার, বিদ্যুত বণ্টন সংস্থা, প্রশাসনের আধিকারিকরা ছিলেন। রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ও ছিলেন। এ দিন রাজগঞ্জ, জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ি অবধি পরপর জংশন, আন্ডারপাস, সার্ভিস রোডের ১১টি দাবি নিয়ে সমস্যার নিষ্পত্তি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ধূপগুড়ি, ফালাকাটা, আলিপুরদুয়ারের অংশ নিয়ে আবার ১৮ সেপ্টেম্বর বৈঠক ডাকা হয়েছে।
গৌতম দেব বলেন, ‘‘এটি উত্তরবঙ্গের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি দেখভালের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। জমির সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে। ইসলামপুর বাইপাস চালু হচ্ছে। বাকি ময়নাগুড়ি অবধি সমস্যা মিটেছে।’’ তিনি জানান, ইসলামরপুর থেকে গোয়ালটুলি অবধি বিদ্যুতের টাওয়ার সরানো হচ্ছে। মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের টাকায় একটি বেসরকারি জমি কেনা হচ্ছে। আন্ডারপাস, সার্ভিস রোডের বিষয়গুলিও মিটেছে।’’ তিনি জানান, ধূপগুড়ি বাইপাস ১০ থেকে কমে ৬ কিলোমিটার হয়েছে। সেখানকার জমির মালিকেরা বাজারের দর চাইছেন। জেলাশাসক তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে মন্ত্রী জানান।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইসলামপুর শহরের অলিগঞ্জ থেকে ইলুয়াবাড়ি (শ্রীকৃষ্ণপুর) পর্যন্ত সাড়ে ১০ কিলোমিটারের রাস্তা ওই বাইপাস। ২০০৩-৪ সালে বাম আমলে জমি অধিগ্রহণ হলেও জমির দখল নিয়ে কৃষকদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল প্রশাসনকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশের পরে ২০১৬ থেকে জমি চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করে প্রশাসন। সেই সময়ও বাধার মুখে পড়তে হয়েছে প্রশাসনকে। একাধিকবার মন্ত্রী গৌতম দেব বৈঠক করেন কৃষকদের সঙ্গে। সমস্যা মেটায় ২০১৭ থেকে কাজ শুরু হয়।
রাস্তাটি ইস্ট ওয়েস্ট করিডরের আওতাভুক্ত জাতীয় সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে তৈরি হচ্ছে। ২০১৩ থেকে শিলিগুড়ির ঘোষপুকুর থেকে আলিপুরদুয়ারের সলসলাবাড়ি অবধি ১৫৪.৮ কিলোমিটার রাস্তাটি চার লেন করার কাজ চালু হয়। মূলত ৩১ এবং ৩১-ডি জাতীয় সড়ক ধরেই চলছে ফোর লেনের কাজ। কেন্দ্রের বরাদ্দ ছিল ৩১২০ কোটি টাকা। এর ৯০৭ কোটি টাকা জমি সংক্রান্ত অধিগ্রহণ, ক্ষতিপূরণে লেগেছে। ধূপগুড়ির পর থেকে ফালাকাটা, আলিপুরদুয়ারের একাংশে চার লেনের রাস্তাটির জট এখনও থেকে গিয়েছে।