অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের বিকাশে পাহাড়ে উৎসব

১০৪ দিনের বন্‌ধের পর রাজ্যের হস্তক্ষেপে বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপা বা মন ঘিসিঙ্গদের হাত ধরে অনেকটাই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে পাহাড়।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৭
Share:

গত কয়েক মাসের টানা ‘উত্তাপে’র পর সন্ধ্যা গড়াতেই শৈলরানি দার্জিলিঙের পারদ অনেকটাই নামছে। দিনভর ঝলমলে রোদ, রাতে ঠান্ডার জেরে তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৬-৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

Advertisement

১০৪ দিনের বন্‌ধের পর রাজ্যের হস্তক্ষেপে বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপা বা মন ঘিসিঙ্গদের হাত ধরে অনেকটাই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে পাহাড়। শীত উপেক্ষা করে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আনাগোনাও শুরু হয়েছে। পরিস্থিতিকে আরও স্বাভাবিক করতে বড়দিনের পড়েই তুলে রাজ্য সরকার এবং জিটিএ ঘোষণা করেছে, ‘তিস্তা রঙ্গিত পর্যটন’ উৎসবের। আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও কালিম্পঙে শুরু হওয়া উৎসব চলবে ৩০ ডিসেম্বর অবধি।

এ বারের উৎসবের লক্ষ্য পাহাড়কে ঘিরে নতুন করে ‘অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমে’র বিকাশ। গোটা পাহাড় জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অ্যা়ভেঞ্চার স্পোর্টসকে এক ছাতার তলার এনে নিয়মাবলীর মাধ্যমে সুরক্ষিতভাবে পর্যটন প্রসারে কাজে লাগাতে চাইছে জিটিএ প্রশাসনিক বোর্ড। তাই পর্যটন উৎসবে ফুল-অর্কিড, সিনেমা, টয় ট্রেন, হোম-স্টে থাকলেও বড় অংশ জুড়ে রাখা হয়েছে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসকে। উৎসবের প্রচারেও একেই থিম করে কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

জিটিএ প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ বলেন, ‘‘আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাহাড়ে পর্যটকেরা আসছেন। আমরা এবার অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমকে উৎসবে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। নতুন ভাবে পাহাড়কে তুলে ধরা হবে।’’

তিস্তা-রঙ্গিতকে ঘিরে র‌্যাফটিং ছাড়াও প্যারাগ্লাইডিং, ট্রেকিং, হটএয়ার বেলুনিং, সাইক্লিং, বাইকিং ট্যুর, রক ক্লাইবিং, ল্যান্ড রোভার ড্রাইভিং বা কাইট ফেস্টিবল কিছুই বাদ রাখা হয়নি উৎসবে। পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, ইতিমধ্যে র‌্যাফটিং এবং প্যারাগ্লাইডিং পাহাড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি দার্জিলিং শহরকে ঘিরে কয়েকটি প্যারাগ্লাইডিং-র এক ভিডিও ভাইরাল হয়ে উঠেছে। তেমনিই, জনপ্রিয় হয়েছে হটএয়ার বেলুনিং বা বাইকিং ট্যুর। রক গার্ডেন, দিলারাম, গিদ্দাপাহাড়, মিনসং, তিস্তাবাজার, নয়াবস্তি-র মত বিভিন্ন এলাকায় অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন স্পট তৈরি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া যুবক যুবতীদের এতে কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু সবই বিক্ষিপ্তভাবে চলছে।

জিটিএ প্রশাসনিক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান অনীক থাপা জানিয়েছেন, জিটিএ পর্যটন দফতরের মাধ্যমে সকলকে এক ছাতার তলায় আনার প্রচেষ্টা উৎসব থেকে শুরু হয়ে যাবে। জিটিএ পর্যটনের দফতরের অফিসারেরা জানান, দার্জিলিং মানেই মন ভোলানো টাইগার হিল, কাঞ্চনজঙ্ঘা, ম্যাল চৌরাস্তা বা রোপওয়ে বা কালিম্পঙের অর্কিড, লাভা-লোলেগাঁওয়ের পাইনের জঙ্গল নয়। এর সঙ্গে সঙ্গেই, পর্যটনের নতুন প্যাকেজ হিসাবে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসও রয়েছে। সুন্দর এলাকায় ঘোরা, হোম-স্টেতে থাকা বা গ্লেনারিজ বা কেভেন্টার্সে খাবারের সঙ্গে আরও অনেক কিছুই দার্জিলিঙকে ঘিরে করা যেতে পারে, সেই বার্তাটাই আমরা পর্যটকদের দিতে চাইছি।

উত্তরবঙ্গের পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট সান্যালেরা জানান, এই অঞ্চলকে ঘিরে অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন জনপ্রিয়তা লাভ করছে। তাই এই ধরনের উৎসবে একে আলাদা করে প্রাধান্য দিয়ে তুলে ধরাটা অত্যন্ত দরকার ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন দার্জিলিংকে পর্যটকদের চেনাতে তিস্তা রঙ্গিত উৎসব সাহায্য করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement