ছবি এএফপি।
করোনার থাবা থেকে শিলিগুড়ি শহরকে বাঁচাতে পূর্ণ লকডাউন, না কি অন্য কোনও ব্যবস্থা, আজ, শনিবার উত্তরকন্যার বৈঠকে সে উত্তর খুঁজবে পুলিশ-প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নবান্ন থেকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিলিগুড়ি শহরে করোনা সংক্রমণ রুখতে কী করণীয়, তা দেখতে।
শিলিগুড়ি শহরে আক্রান্তের সংখ্যা চারশোর কাছাকাছি। শিলিগুড়ি শহরে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে দু’একটি ছাড়া সব ওয়ার্ডেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে জেলাশাসক এবং কোভিড হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করেন করোনা নিয়ন্ত্রণে উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত রায়। তিনি জানান, শিলিগুড়ি শহরে সম্পূর্ণ লকডাউনের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে, এ কথাও উঠে এসেছিল যে, কনটেনমেন্ট জ়োনের উপরই বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সংক্রমণ বেড়ে চলায় এখন কী সিদ্ধান্ত হয়, সে দিকেই তাকিয়ে শহর।
বৈঠকে কারা থাকবেন, তা কলকাতা থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। চল্লিশ জনকে ডাকা হয়েছে বৈঠকে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিভাগীয় কমিশনার, সৌরভ চক্রবর্তী, রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার এবং শিলিগুড়ির তৃণমূল নেতৃত্বের অনেকে। জনপ্রতিনিধি নন বা প্রশাসনিক পদে নেই, এমন নেতাদের সমাজসেবী হিসেবে ডাকা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর বাইরে দার্জিলিং জেলার সমস্ত থানার আইসি, ওসি, এসডিও, বিডিওদেরও ডাকা হয়েছে।
বৈঠকে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে না ডাকা নিয়ে সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘নির্দেশ মেনেই বৈঠক হচ্ছে। পর্যটনমন্ত্রীর উপর অনেক গুরুদায়িত্ব রয়েছে। বৈঠকে আলোচিত বিষয় নিয়ে প্রয়োজনে মন্ত্রীর সঙ্গে পরে কথা বলে নেব।’’ প্রশাসনের অন্য একটি সূত্রের বক্তব্য, মন্ত্রীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই তাঁকে বৈঠকে রাখা হয়নি। তবে মন্ত্রীকে না ডাকায় দলের নেতাদের মধ্যে যাঁরা সমাজসেবী হিসেবে ডাক পেয়েছেন, তাঁদের কেউ কেউ নাকি বৈঠকে যোগ দিতে চাইছেন না। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই বৈঠকের বিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে যে সব এলাকায় সংক্রমণ বেশি, সেখানে কঠোর ভাবে বিধিনিষেধ মানার কথা বলা হয়েছে। ৪৬, ২৮, ১৮ নম্বরের মতো ওয়ার্ডে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বৈঠকে পুরসচিবকে ডাকলেও পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের কোনও সদস্যকে ডাকা হয়নি। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের বোর্ড সদস্য শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এই বৈঠক, না কি করোনা পরিস্থিতি সামলাতে, সেটাই প্রশ্ন।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞদের মতামত দরকার।’’ তৃণমূল নেতা দীপক শীল বলেন, ‘‘অবিলম্বে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের পথ খোঁজা দরকার।’’ ‘শিলিগুড়ি ফাইট করোনা’ মঞ্চের জয়েন্ট কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘যেখানে সংক্রমণ বেশি, সে সব ক্ষেত্রে প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।’’