ফাইল চিত্র।
গরুমারার অভয়ারণ্যের জনপ্রিয় গাছবাড়ি থেকে মূর্তি টেন্ট বা মেন্দাবাড়ি জঙ্গল ক্যাম্প। আবার বাঙালির পছন্দের লাভা, লোলেগাঁও বা বোলপুর, তাজপুর, মুকুটমণিপুর— রাজ্য বন দফতরের অধীনে থাকা ৩২টি ইকো টুরিজম রিসর্ট বা পর্যটন আবাসগুলির দায়িত্ব বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়ে হল। সোমবার বিকেলে কলকাতার অরণ্য ভবনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে বন দফতরের আধিকারিক এবং পর্যটন দফতরের সঙ্গে জড়িতদেরও ডাকা হয়েছে। সেখানে পর্যটন আবাসগুলির বিকল্প পরিচালন ব্যবস্থা, বেসরকারি হাতে উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আপাতত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলেও যৌথ পরিচালন বা লিজ় দিয়ে বছরে সুনির্দিষ্ট টাকা রোজগারের বিষয়টি বন দফতর মোটামুটি ঠিক করে ফেলেছে।
সরকারি সূত্রের খবর, গত ছ’মাসে করোনার জন্য রিসর্টগুলির বেশিরভাগ বন্ধ রয়েছে। হাতে গোনা ৯টি পর্যটক আবাস জুন মাস থেকে খোলা হয়েছে। বন্ধ থাকার সময়েও সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়েছে। বাংলোগুলি দেখভালও করতে হয়েছে। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন বন দফতর। তাই পর্যটক আবাসগুলি বেসরকারি হাতে দেওয়া যায় কিনা, তাই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেখানে টেন্ডার করে সবচেয়ে বেশি দর দেওয়া বেসরকারি সংস্থার কাছে আবাস লিজ় দেওয়ার কথাও রয়েছে। আরেক দফায় আলোচনা করা হবে বলে এদিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে।
বর্তমানে আইএসএফ অফিসার টিভিএন রাও ফরেস্ট ডিরক্টরেটের প্রধান মুখ্য বনপাল হিসেবে কাজ করছেন। তিনিই গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন স্তরে চিঠি পাঠিয়ে বৈঠক ডাকেন। সেখানে ৩২টি পর্যটক আবাসের তালিকা দিয়ে দফতরের নতুন ভাবনার কথা বলা হয়। আর গোটা প্রক্রিয়াটি দেখাভাল করছেন মুখ্য বনপাল এস শশী কুমার। রাজ্য বন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, বন দফতরের বিভিন্ন কাজকর্মের মধ্যে পর্যটন বা ইকো ট্যুরিজম একেবারেই শেষের দিকে রয়েছে। বন অফিসারেরা পর্যটনের বিশেষজ্ঞও নয়। তাই অনেক সময় দফতরের নানা সমস্যাও হয়। তাই নানাভাবে বেসরকারি অংশীদারির কথা ভাবা হচ্ছে। লিজ়, ম্যানেজমেন্ট চুক্তি বা যৌথ পরিচালনাও হতে পারে।
রাজ্য বন উন্নয়ন নিগম ও রাজ্য বন উন্নয়ন এজেন্সি পর্যটক আবাসগুলির দেখভাল করে। পর্যটন ব্যবসায়ীদের মত, পাহাড় হোক বা ডুয়ার্স বা সমুদ্র, বন দফতরের ইকো ট্যুরিজম সেন্টারগুলির ভৌগোলিক অবস্থান অসাধারণ। মংপং, মেন্দাবাড়ি বা বরোডাবরির মতো পর্যটক আবাসে মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত থেকেছেন। কিন্তু অনেক সময়ই সেগুলির পরিষেবা, পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সরকারি কর্মীদের থেকে অনেক সময় পর্যটকেরা সঠিক ব্যবহার পান না বলেও অভিযোগ। সেই সঙ্গে রয়েছে দফতরের বছর বছর আর্থিক বাজেট। তাই পরিষেবা এবং পরিকাঠামো ঠিক রাখার লক্ষ্যে বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভাবনা শুরু হয়েছে।