মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমতো ‘নতুন দার্জিলিং’-এর পরিকাঠামো নিয়ে রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পর্যায়ে বৈঠক হয়ে গেল। সরকারি সূত্রের খবর, গত ২৩ মে দুপুরে রাজ্যের মুখ্যসচিব পর্যায়ে পর্যটন টাস্ক ফোর্সের ‘অনলাইন’ বৈঠক হয়েছে। তাতে পর্যটনের প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী-সহ বিভিন্ন সচিবেরা ছিলেন। কিছু সময়ের জন্য তাতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় দার্জিলিঙের জেলাশাসক তথা জিটিএ-র প্রধান সচিব এস পুন্নমবলমকে। দার্জিলিঙের মানেভঞ্জন, সান্দাকফু, টংলু থেকে শ্রীখোলা, রিম্বিক হয়ে বিজনবাড়ি এই নতুন এলাকাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই গোটা এলাকায় ট্রেকিংয়ের জন্য জনপ্রিয়। এলাকার পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
রাজ্য পর্যটন দফতরের এক সচিবের কথায়, ‘‘সরকার নতুন ভাবে দার্জিলিঙের জন্য চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। একটা নতুন সার্কিটকে রেখে, সেখানেই পরিকাঠামো প্রয়োজন মতো তৈরি হবে। এর মধ্যে সান্দাকফুর দিকটা বেশি জনপ্রিয় বলে সেই এলাকা বাছাই করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, ‘অনলাইন’ বৈঠকে বিভিন্ন নির্দেশ জেলা প্রশাসন, পর্যটন দফতরকে দেওয়া হয়েছে। জিটিএ-র সঙ্গে সমন্বয় রেখে দ্রুত কাজের কথা বলা হয়েছে।
দার্জিলিং এবং কালিম্পং দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হলেও, দু’টি শহরই সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। পাহাড়ি শহরগুলিকে তাই নতুন ভাবে আরও ছডিয়ে দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড়ি শহর দু’টির এলাকা আরও প্রসারিত করা হবে। দার্জিলিং মানে শুধু শৈলশহরটাকে না ভেবে জেলার আর একটি অংশকে জনপ্রিয় করার তোলার পরিকল্পনাকেই ‘নয়া’ তকমা দেওয়া হচ্ছে। এই দুই শহরের মধ্যে পর্যটনকে সীমাবদ্ধ না রেখে ছডিয়ে তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে। গত ১১ মে মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন সভাঘরে নতুন ‘দার্জিলিং ও কালিম্পং’-এর তৈরির ভাবনা নিয়ে পর্যটন দফতরের প্রধান সচিবকে কাজের নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরেই ধাপে ধাপে বৈঠক, আলোচনা শুরু হয়েছে। ২৩ মে পর্যটন নিয়ে বৈঠক করেছে কালিম্পং জেলা প্রশাসনও।
তবে আলোচনার শুরু গত ফেব্রুয়ারিতেই। সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর শিলিগুড়ি সফরের সময় তাঁর সঙ্গে মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে পর্যটন সচিব-সহ এক ডজন সচিব এসেছিলেন। সেই সময় পর্যটনের প্রধান সচিব পর্যটন সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে সরকারের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয় হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক। সেখানে সান্দাকফু এলাকার সার্বিক পরিকাঠানোর জন্য কী কী করা দরকার তা জানানো হয়েছিল। এর পরে সরকারি স্তরে ১০ মে থেকে আলোচনা, রিপোর্ট তৈরি শুরু হয়। এ বার সচিব পর্যায়ে টাস্ক ফোর্সের বৈঠক করে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।