পুরাতন মালদহের জমিতে এখনও আলু তোলা শুরু হয়নি।
জমি থেকে আলু উঠতে এখনও বাকি এক সপ্তাহ। শুক্রবার, মালদহ ও দুই দিনাজপুরে শুরু হল আলুর বন্ড বিলি। মরসুমের শুরুতেই হিমঘরের দুয়ার খুলে যাওয়ায় বন্ড নিয়ে কালোবাজারির আশঙ্কা করছেন তিন জেলার কৃষকদের বড় অংশ। তাঁদের দাবি, জমি থেকে আলু উঠতে সপ্তাহ খানেক দেরি। সে সুযোগে কৃষক সেজে ফড়েরা বন্ডের জন্য হিমঘরগুলিতে ভিড় করতে পারে। বন্ড বিলিতে সতর্ক থাকা উচিত প্রশাসনের।
আলুর বন্ড বিলিতে কালোবাজারি রুখতে তৎপর প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের দাবি, আগামী সোম এবং মঙ্গলবার জেলায় জেলায় হিমঘর মালিক, কৃষি দফতর, কৃষি বিপণন দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। এ ছাড়া, কৃষকদের আধার কার্ড, জমির নথি দেখে বন্ড দেওয়া হবে। কৃষকদের বন্ড নিয়ে সচেতন করতে প্রচারও চালানো হবে, দাবি প্রশাসনের কর্তাদের। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “আলুর বন্ড নিয়ে কালোবাজারি বরদাস্ত করা হবে না। হিমঘরগুলিতে নজরদারি চালানো হবে।” উত্তর দিনাজপুরের উপ-কৃষি অধিকর্তা সফিকুল আলম বলেন, ‘‘১০ মার্চের পর থেকে জেলার হিমঘরগুলিতে আলু ঢুকবে বলে মনে করা হচ্ছে। বন্ড নিয়ে কালোবাজারি রুখতে কৃষি দফতর ও কৃষি বিপণন দফতর নজরদারি চালাচ্ছে। চাষিদের উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ খতিয়ে দেখে বন্ড দেওয়া হচ্ছে।’’
কৃষি দফতরের দাবি, মালদহে সাড়ে তিন লক্ষ, উত্তর দিনাজপুরে সাড়ে সাত লক্ষ এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে ৩৮ হাজার টন আলু উৎপাদন হয়। এ বারও জেলাগুলিতে আলু উৎপাদনের সম্ভাবনা ভাল রয়েছে। তবে জেলায় জেলায় হিমঘরের অভাব রয়েছে। মালদহে ১৪টি, উত্তর দিনাজপুরে নয়টি এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে চারটি হিমঘর রয়েছে। হিমঘরের অভাবকে কাজে লাগিয়ে জেলাগুলিতে ফড়েরা সক্রিয় হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, কৃষক সেজে আলুর বন্ড ফড়েরা নিয়ে নেয়। সে বন্ড পরে কৃষকদের অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কিনতে হয়। পুরাতন মালদহের আলু চাষি সুরেন রাজবংশী বলেন, “সপ্তাহ খানেক পর থেকে জমিতে আলু তোলার কাজ শুরু হবে। আমরা সে সময় আলু তুলতে ব্যস্ত থাকব। এখন বন্ড বিলি হলে প্রকৃত কৃষকেরা বঞ্চিত হবেন।” মালদহের হিমঘর সংগঠনের সভাপতি উজ্জল সাহা বলেন, “প্রকৃত কৃষকেরা যাতে বঞ্চিত না হন, সে জন্য বন্ড বিলিতে হিমঘর মালিকেরাও সজাগ রয়েছেন।”