প্রকাশ্যে: বাজারে ধান কিনছে ফড়েরা। গোয়ালপোখরে। নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টা। উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়ায় দেখা গেল, প্রকাশ্যে খোলা বাজারে চাষিদের থেকে ধান কিনছে ফড়েরা। নেই প্রশাসনের নজরদারি। সারাদিন কেনার পর বিকেলে বস্তা ভরে সেই ধান লরিতে ভরে পাঠানো হচ্ছে মিলগুলিতে।
সরকারি ধান সহায়ক কেন্দ্র, কিসানমাণ্ডি বা সিপিসিতে ধান বিক্রি করতে গেলে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে বলে ফড়েরা চাষিদের ভুল বোঝাচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে বিভ্রান্ত হয়ে অনেক গরীব চাষিই সহায়ক মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সিপিসিতে ধান বিক্রি করলে কুইন্টাল প্রতি ১৮৮০ টাকা পান চাষিরা। সেখানে ফড়েরা খোলা বাজারে কিনছে কুইন্টাল পিছু ১৩০০ টাকা দামে। এ দিন দেখা গেল, ক্ষতি সত্বেও ফড়েদের কাছে লাইন দিয়েছেন চাষিরা। পাঞ্জিপাড়া এলাকার চাষি জামিল আলম বলেন, ‘‘সঙ্গে সঙ্গে টাকা পেয়ে যাওয়ায় ওদের কাছেই বিক্রি করে দিলাম।’’ চাষিরা জানান, মাঠের ধান কাটার আগেই অগ্রিম টাকা দিয়ে যাচ্ছে ফড়েরা।
এক ফড়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কেবল সরাসরি টাকা দেওয়াই নয়, সরকারি কেন্দ্রে ধান বিক্রি করার ঝামেলা অনেক। ফর্ম ভরে লাইনে দাঁড়িয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ধান বিক্রির পর কবে টাকা ঢুকবে তারও ঠিক নেই। বেশিরভাগ চাষি ধান বিক্রি করে আলু-সহ শীতকালীন আনাজ চাষ করেন। সে জন্যই ফড়েদের কাছে বিক্রি, অগ্রিম টাকাও নিয়ে নিচ্ছে চাষিরা।
প্রকাশ্য ফড়েরা ধান কিনছে খবর পেয়ে এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘বিষয়টি কানে এসেছে। প্রশাসনকে বলেছি ব্যবস্থা নিতে।’’ এই ব্যাপারে জেলা খাদ্য নিয়ামক দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। তবে চাষিদের নিজেদেরও সচেতন হবে।’’ ইসলামপুরের মহকুমাশাসক সপ্তর্ষি নাগও ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে গোয়ালপোখরের চাষি মহম্মদ আজিজুর রহমান কথায়, ‘‘প্রশাসন শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে। সবদিক থেকে মার খাচ্ছে চাষিরা। আর ফড়েদের বাড়বাড়ন্ত চলছেই।’’