মৃতা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। নিজস্ব চিত্র।
প্রেমিকার সঙ্গে একাধিক যুবকের সম্পর্ক আছে। সেই সন্দেহে প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন প্রেমিক। মালদহের হালনা গ্রামে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর একাদশ শ্রেণির ছাত্রী খুনের ঘটনায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। পুলিশি জেরার মুখে এই খুনের কথা স্বীকারও করেছেন শামিম আক্তার নামের ওই যুবক। ওই ছাত্রীর নিখোঁজ হওয়ার পিছনে তাঁর ভূমিকা আছে, এই সন্দেহে পুলিশ আগেই শামিমকে আটক করেছিল। এ বার পুলিশি জেরায় এমনটাই স্বীকার করেছেন ওই অভিযুক্ত।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শামিম তাঁদের জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর সঙ্গে একাধিক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছাত্রীটি তাঁর জীবন নষ্ট করে দিচ্ছিলেন বলেও শামিমের দাবি। আর সেই কারণেই রাগের বশে তিনি প্রেমিকাকে খুন করেন বলেই পুলিশকে জানিয়েছেন। অভিযুক্ত আরও জানান, প্রেমিকাকে খুন করে তাঁরই বাড়ির পিছনের পুকুরপাড়ের একটি গাছের শিকড়ের তলায় তিনি দেহ লুকিয়ে দিয়েছেন। তবে এই ঘটনায় শামিম একা না কি আরও কেউ যুক্ত ছিলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন রবিবার রাতে মালদহ থানার যাত্রাডাঙা অঞ্চলের হালনা গ্রামে বাড়ির কাছ থেকে নিখোঁজ হন ওই ছাত্রী। তিনি একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। বুধবার সকালে ছাত্রীর বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ফোঁটা ফোঁটা রক্তের দাগ দেখা যায়। পাশাপাশি শরীর টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ারও কিছু চিহ্ন মেলে।
পুলিশের কাছে স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই পরিত্যক্ত বাড়ির চারপাশ খতিয়ে দেখে। একটি অন্তর্বাস এবং ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ব্যাগ তল্লাশি করে একটি চিঠিও পাওয়া যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া চিঠিতে লেখা ছিল, ‘তুমি তো ওকেই বিয়ে করবে। তার জন্য আমাকে গাল দিচ্ছ। যেখানেই বিয়ে কর, শুধু এটুকু বলব ভাল থেকো। যেখানে বিয়ে লাগছে তোমার সেখানে বিয়ে করে নিয়ো। ভাল কাউকে দেখে বিয়ে করে নিও।’ ওই চিঠির সূত্র ধরেই শামিমকে জেরা শুরু করে পুলিশ। তবে এই চিঠি শামিমের লেখা কি না, তা জানা যায়নি। এর পরেই পরিত্যক্ত বাড়ির পিছনের পুকুরেও তল্লাশি শুরু হয়। নিখোঁজ তরুণীর পরিবারের দাবি ছিল, ওই ছাত্রীকে অপহরণ বা খুন করা হয়েছে। নিখোঁজ ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই শামিমকে আটক করা হয়।
(গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তকে ‘আপনি’ সম্বোধনে আপত্তি প্রকাশ করেন কেউ কেউ। কিন্তু আইনের বিচারে দোষী সাব্যস্ত হননি, এমন অভিযুক্তকে ‘আপনি’ সম্বোধনেরই পক্ষপাতী আনন্দবাজার অনলাইন)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।