প্রতীকী ছবি
অপহরণকারীদের কাছে মুক্তিপণের টোপ ফেলে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) অপহরণ মামলার কিনারা করল পুলিশ। নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ৭২ ঘণ্টা পর শিলিগুড়ির পঞ্জাবিপাড়ার বাসিন্দা ওই সিএ-কে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের সীমানাবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এল বিশেষ তদন্তকারী দল। যদিও বিষয়টি নিয়ে শনিবার রাত পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দিতে চাননি পুলিশকর্তারা। সূত্রের দাবি, ওই সিএ কিসান আগরওয়ালকে অপহরণের অভিযোগে চার জনকেও আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তাদের পরিচয় সামনে আনছে না শিলিগুড়ি পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ হয়ে যান ওই সিএ। তার পর থেকে তাঁর স্ত্রী শিশিরের কাছে মোট পাঁচ বার ফোন এসেছিল মুক্তিপণ চেয়ে। দ্রুত ১২ লক্ষ টাকা জোগাড় করতে বলা হয়েছিল। ঘটনাটি নজরে আসার পর ঘুঁটি সাজায় শিলিগুড়ি পুলিশ। অপরাধীদের ফোন নিয়ে তাদের কাছে টাকা দেওয়ার জায়গা জানতে চাওয়া হয়। শিলিগুড়ি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশের একটি বিশেষ দল সেই টাকা নিয়ে রওনা হয়েছিল কুশীনগর এলাকার উদ্দেশে। কারণ সেখানেই শেষবার টাওয়ার লোকেশন দেখা গিয়েছিল কিসান আগরওয়ালের। তার পর ফোন সুইচড অফ হয়ে যায়। তদন্তে জানা গিয়েছে, পরে বিহারের গোপালগঞ্জ এলাকায় আনা হয় কিসানকে। ওই এলাকায় টাকা হস্তান্তর হওয়ার কথা ছিল। তা নিতে গিয়েই হাতেনাতে ধরে ধরা পড়ে যায় অপরাধীরা।’’ গোপালগঞ্জের জেলা পুলিশ সুপার রসিদ জামান বলেন, ‘‘এখনও কিছু তথ্য যাচাই করা বাকি রয়েছে। তার পরেই এ ব্যাপারে যা বলার বলতে পারব।’’
সিএ-র হদিস মিলতেই খুশির হাওয়া তাঁর পরিবারেও। তবে বাড়ি ফেরা না পর্যন্ত পরিবারের সকলেই একটু উদ্বিগ্ন। কিসানের ভাইপো দীপক আগরওয়াল বলেন, ‘‘অনেক রকম শুনছি। কিন্তু পুলিশ এখনও আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি। তাই কাকা বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত একটু উদ্বেগের মধ্যেই রয়েছি।’’ তবে নর্থ বেঙ্গল মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তা সঞ্জয় টিব্রেওয়াল বলেন, ‘‘শুনেছি, উদ্ধার করা হয়েছে। অপেক্ষা করছি তাঁর শিলিগুড়ি ফেরার জন্য।’’
পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, হিলকার্ট রোডের একটি অফিস থেকে বিভিন্ন গ্রাহকের হিসেবপত্রের কাজ করতেন ওই সিএ। বিহারের কোনও এক গ্রাহকের হিসেবে কিছু গোলমাল হওয়ার জন্য তাঁর বেশ কিছু টাকা লোকসান হয় বলেই প্রাথমিক তদন্ত জানতে পেরেছে পুলিশ। তারাই কিসানকে অপহরণ করেছে, নাকি কোনও পেশাদার দলকে দিয়ে অপহরণ করানো হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখছেন গোয়েন্দারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইলের টাওয়ার দেখা গিয়েছিল বিহার-উত্তরপ্রদেশ সীমানার কুশীনগরে। গত কয়েক দিন ধরে তার আশপাশে টানা তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু পরে টাকা পৌঁছে দিতে বলা হয় বিহারের অন্য এলাকায়। সেখানেই ডেলিভারিম্যান সেজে গিয়ে পুলিশ কিসানকে উদ্ধার করে। আটক করা হয় দুষ্কৃতীদের।