Laibari Haat

মহিলারাই ক্রেতা ও বিক্রেতা লইবাড়ির হাটে

হবিবপুরের আদিবাসী-প্রধান লইবাড়ির বাজারের সঙ্গে এখানেই মিল মণিপুর ইম্ফলের ‘ইমা কিথল’ বাজারের। লইবাড়ির হাটও বেশ পুরোনো।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

লইবাড়ি (মালদহ) শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০৩
Share:

মালদহের লইবাড়ির বাজার। নিজস্ব চিত্র।

‘ইমা কিথল’ বাজারের নাম শুনেছেন? দাঁড়িপাল্লা হাত থেকে নামিয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলা দোকানির উত্তর, ‘‘না।’’ কখনও কি গিয়েছেন? বিরক্তির সুরে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যে জায়গার নামই শুনিনি, সেখানে যাব কী ভাবে?’’ ফুচকা বিক্রি থামিয়ে ইন্টারনেট ঘেঁটে মণিপুরের মহিলা পরিচালিত ‘ইমা কিথল’ বাজারের ছবি বের করে ফেলেন মালদহের লইবাড়ি হাটের এক ষোড়শী। চেঁচিয়ে সে বলে, ‘‘আমাদের বাজারের মতোই তো ইমা কিথল বাজার। সেই বাজারের সমস্ত বিক্রেতাই মহিলা।’’

Advertisement

হবিবপুরের আদিবাসী-প্রধান লইবাড়ির বাজারের সঙ্গে এখানেই মিল মণিপুর ইম্ফলের ‘ইমা কিথল’ বাজারের। লইবাড়ির হাটও বেশ পুরোনো। স্থানীয়দের দাবি, লইবাড়ি গ্রামের পিচ-রাস্তার ধারে মাঠে প্রায় ৫০ বছর ধরে হাটটি রয়েছে। হাটে আনাজ, তেলে ভাজা, মাছ, মাংস বিক্রেতা নিয়ে দোকানির সংখ্যা ৬০টি। দোকানিরা সকলেই মহিলা। কেউ স্কুলে পড়ে, কেউ গৃহবধূ। সপ্তাহে দু’দিন বৃহস্পতি ও রবিবার হাট বসে। টাটকা আনাজ, দেশি মাছের টানে সেখানে ভিড় জমান হবিবপুরের তাজপুর, কালপেচি, ষোলাডাঙা, বেলতলা, ডাঙাপাড়ার মতো বহু গ্রামের মানুষ।

মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কের ধারে হবিবপুরের তাজপুর গ্রাম। রাজ্য সড়ক ঘেঁষা গ্রামের পিচ-রাস্তা দিয়ে চার কিলোমিটার পেরিয়ে পৌঁছতে হয় লইবাড়ি হাটে। বিক্রেতা সবাই মহিলা কেন? পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলা রেখা মণ্ডল বলেন, “বিয়ের পর থেকে দেখছি হাটে মহিলা দোকানিরা কেনাবেচা করছেন। প্রথম দিকে অবাক হয়েছিলাম। এখন নিজেও বাড়ির এক ফালি জমিতে চাষ করা বেগুন, লাউ নিয়ে হাটে বসে কেনাবেচা করি।” অপর এক মহিলা ভাগ্যলিপি মণ্ডল বলেন, “গ্রামের পুরুষদের একাংশ ভিন্ রাজ্যে কাজ করেন। অনেকে চাষবাস করেন। চাষবাস করে ঘরে ফিরতে সন্ধে হয়ে যায়। তাই বাড়ির উৎপাদিত ফসল মেয়ে-বউরা হাটে গিয়ে বিক্রি করি। তাতে বাড়তি উপার্জন হয়।” লইবাড়ির হাটে মহিলারা নিজেদের বাড়ির উৎপাদিত আনাজ, ঘরে পালিত হাঁস, মুরগি, ডিম বিক্রি করেন। বাজারটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল খোদ মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়াও। তিনি বলেন, “প্রশাসনিক কাজে গিয়ে লইবাড়ি মহিলা পরিচালিত হাট আমি ঘুরে দেখেছি। সে বাজারে আনাজ যেমন টাটকা, তেমনই দামও ঠিকঠাক। হাটটির পরিকাঠামো আরও উন্নত কী ভাবে করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement