সংস্থার দফতরে ইমন।নিজস্ব চিত্র
পশমে ঢাকা শরীর শীতপ্রধান অঞ্চলে থাকার উপযুক্ত। অনেকে শখ করে বা ভালোবেসে পোষ্য নিয়ে থাকেন এই সারমেয়কে। এ দেশে রাখতে গেলে এসি-তে রাখতে হয় তাকে, তাহলেই শরীর ভাল থাকে সেন্ট বার্নার্ড প্রজাতির ওই সারমেয়র। কিন্তু তাকেই গরমে শিলিগুড়ির রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। গরমে, খিদেয় ধুঁকছিল সেটি। শেষে একটি পশুপ্রেমী সংস্থার কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে নিজেদের কাছে।
ওই সংস্থার সভাপতি দেবর্ষিপ্রসাদ বিশ্বাস জানান, প্রায় ১০ দিন আগে শক্তিগড় এলাকা থেকে একজন ফোন করে জানান একটি বিদেশি প্রজাতির কুকুর রাস্তায় পড়ে রয়েছে। শোনামাত্র গিয়ে উদ্ধার করা হয় প্রাণীটিকে। দেবর্ষিপ্রসাদ জানান, প্রচন্ড জ্বর এবং গায়ে ঘা ছিল, চিকিৎসা চলছে, জ্বর কমে গিয়েছে। মাস আটেকের মাদি কুকুরটির নাম দেওয়া হয়েছে ইমন। সংস্থার দাবি, জ্বর হয়েছিল বলে হয়তো করোনা সংক্রমণের ভয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতা বিরোধী আইনে এমন কাজ শাস্তিযোগ্য বলেও সংস্থার দাবি। প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের শিলিগুড়ির সহ অধিকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ‘‘কুকুরের করোনা হতে পারে। তবে তা কোভিড-১৯ নয়। তা মানুষের শরীরে সংক্রামিত হয় না। কুকুরের মালিকের কোভিড-১৯ হলে তা কুকুরেও সংক্রামিত হতে পারে। কিন্তু তা হলেও তা থেকে মানুষের বা অন্যান্য প্রাণীর দেহে ছড়ায় না।’’
নতুন কোনও পরিবার দত্তক নিতে চাইলে দেওয়া হবে ইমনকে। তবে বন্ধ্যাত্বকরণ অস্ত্রোপচার করেই দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এই ধরনের কুকুরকে দিয়ে অনেকে প্রজনন করিয়ে ব্যবসা করে। তার মধ্যে যাতে ইমনকে পড়তে না হয় তার জন্যই এমন ভাবনা বলে সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। দেবর্ষিপ্রসাদ বলেন, ‘‘বেশ কয়েকজন ওকে নিতে চেয়ে ফোন করছে। ওর বন্ধ্যাত্বকরণ হবে শুনে অনেকেই পিছিয়ে গিয়েছে।’’
তুখোড় ঘ্রাণশক্তি থাকা সেন্ট বার্নার্ড প্রজাতির কুকুরকে আগে ইউরোপের আল্পসে তুষারঝড়, ধসে আটকে পড়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে ব্যবহার করা হতো। উত্তরবঙ্গ, সিকিমে হাতেগোনা কয়েকজনের পোষ্য এই কুকুর।