গাছতলায় চলছে স্কুল। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতীর আদলে তৈরি স্কুল নয়। তবুও রোজ গাছতলায় চলে পড়াশোনা। গত বছর আষ্টেক ধরে একই রীতি চলে আসছে মালদহের মানিকচক ব্লকের জোতপাট্টা ব্লকের কিসানটোলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষা— স্কুলবাড়ি না থাকায় খোলা আকাশের নীচে গাছতলাই ভরসা ওই স্কুলের পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
জোতপাট্টার বাসিন্দারা বলছেন,২০১৪ সালে স্কুলটির ভবন গঙ্গায় তলিয়ে যায়। তার পর থেকেই এই পরিস্থিতি। নদী তীরবর্তী এলাকায় জমি পাওয়া যায়নি। তাই আবার স্কুলভবন তৈরি করা সম্ভব হয়নি। ২০১৭ সালে লালু মণ্ডল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জমিদান করেন। তবুও স্কুল ভবনটি তৈরি হয়নি। তাই এখন বছরভর বাঁশঝাড়ের নীচেই চলে পঠনপাঠন।
বিদ্যালয়টির পড়ুয়া সংখ্যা ৬৮। শিক্ষক রয়েছেন জনা তিনেক। তাঁদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গিরীশচন্দ্র মণ্ডল, সহ-শিক্ষক অচিন্ত্য মণ্ডল এবং সহ-শিক্ষিকা সারমিন খাতুন। সারমিনের কথায়, ‘‘এই গরমে বাইরে ক্লাস হচ্ছে। এটা খুবই অসুবিধার। স্কুলের বিল্ডিং হয়ে গেলে আমাদের সকলেরই খুব সুবিধা হবে। আশা করি সেই সময় পড়ুয়ার সংখ্যাও বাড়বে।’’ একই অসুবিধার কথা জানাল সনু মণ্ডল নামে ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রও। তার কথায়, ‘‘এখন বাঁশঝাড়ে ক্লাস হয় আমাদের। তবে ঝড়বৃষ্টি হলে আর ক্লাস হয় না। একটা ঘর হলে খুব ভাল হত।’’
এ নিয়ে মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের বক্তব্য, ‘‘ওই স্কুলটির কথা আমি শুনেছি। ওখানকার এক ব্যক্তি জমি দান করেছিলেন। কিন্তু সেই জমি লম্বাটে। তাই সেখানে স্কুল তৈরি করা কঠিন। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক কর্তদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’’ মালদহ জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি বাসন্তী বর্মণ বক্তব্য, ‘‘শিক্ষা দফতর ভবন তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে পারে। সেই অর্থ রয়েছে। জমির খোঁজ চলছে। দানের জমি পাওয়া যাচ্ছে না। যে জমিটি পাওয়া গিয়েছে তা অপর্যাপ্ত। তাতে ভবন তৈরি করা সম্ভব নয়।’’