প্রতীকী চিত্র।
অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে মাটিতে ফেলে পেটে লাথি মারা এবং তাঁর শাশুড়িকে বিবস্ত্র করে নিগ্রহের অভিযোগ উঠল মালদহের গাজলের এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তৃণমূল নেতা কামরুজ্জমান এবং তাঁর অনুগামীদের হামলায় আলালের মুড়িয়াকুন্ডু গ্রামের ওই গর্ভবতী মহিলা গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন তাঁর শাশুড়ি।
অভিযোগ, ওই মহিলার স্বামী নিশাদ সেলিম রেজার কম্পিউটারের দোকানে তালা মেরে দিয়েছে অভিযুক্তরা। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও কোনও ফল হয়নি।
মুড়িয়াকুন্ডু গ্রামের গা ঘেঁষে চলে গেছে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক। আর জাতীয় সড়ক লাগোয়া জমিতে ‘নজর’ পড়েছে মাফিয়াদের। অভিযোগ, বহিরাগত প্রমোটার,ঠিকাদার, জমি মাফিয়াদের ভিড় লেগেই থাকে এই গ্রামগুলোতে। পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে থাকে স্থানীয় বা জেলা স্তরের শাসক দলের নেতারা। নিশাদ সেলিম রেজার রয়েছে ছোট কম্পিউটারের দোকান এবং লাগোয়া বসত বাড়ি। আর সেদিকেই ‘নজর’ পড়েছে জমি মাফিয়া তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের।
তাঁরা অন্যত্র সরে যেতে বলেছিল কিছু টাকার বিনিময়ে। কিন্তু নিশাদ রাজি না হওয়ায় তাঁর ওপর হামলা চলে। এরপরে নিশাদ পুলিশে অভিযোগ জানান। ঘটনার দিন নিশাদ বাড়িতে ছিলেন না। ঘরে বিধবা মা এবং স্ত্রী ছিলেন। অভিযোগ সেই সময় স্থানীয় তৃণমূল নেতা কামরুজ্জামান, মনিরুজ্জামান, আহাসানুল ইসলাম এবং করিমুল ইসলাম-সহ আরও কয়েকজন হামলা চালান। তাঁরা জমির দলিল চান। নিশাদের মা রাজি না হলে তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধর দেওয়া হয়। নিশাদের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বাধা দিতে এলে তাঁকে মাটিতে ফেলে পেটে লাথি মারে দুস্কৃতীরা। এরপর বাইরে নিশাদের দোকানে তালা মেরে চলে যায় তাঁদের গ্রামছাড়া করার হুমকি দিয়ে।
পরে নিশাদ বাড়ি এসে তাঁদের প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল পরে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। গাজল থানায় অভিযোগ জানিয়েও কেউ গ্রেফতার হয়নি বলে অভিযোগ। উল্টে নিশাদরা এখন মালদা শহরে হাসপাতাল চত্বরে রয়েছেন। আতঙ্কে ঢুকতে পারছেন না গ্রামে। যদিও দলের তরফে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, বিষয়টি খতিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।