প্রতীকী ছবি।
রায়গঞ্জের চার জন বেসরকারি চিকিত্সক ভুয়ো—এই দাবি করে উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলাশাসকের কাছে একটি বেনামি চিঠি এসেছে।
গত ১৩ জুন দুটি পৃথক ইনল্যান্ড লেটারে চিঠি দুটি হাতে পেয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলাশাসক। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, ওই চার ভুয়ো চিকিত্সক নিজেদের নামের বোর্ডে এমবিবিএস লিখে দীর্ঘ দিন ধরে চুটিয়ে প্র্যাকটিস করছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুজন উকিলপাড়া, একজন স্টেট ব্যাঙ্কের রায়গঞ্জ শাখার পাশে ও আর একজন বোগ্রাম এলাকার বিভিন্ন ওষুধের দোকানে বসে রোগী দেখছেন। ক্ষমতা থাকলে ভুয়ো চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে কিছু করে দেখানোর জন্য মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ওই চিঠিতে চ্যালেঞ্জও জানানো হয়েছে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধার দাবি, চিঠি হাতে পাওয়া মাত্রই গত ১৩ জুন বিকালে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা রোগী সেজে অভিযুক্ত চিকিত্সকদের দেখাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই অভিযুক্তরা সকলে পালিয়ে যান। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত তাঁদের চেম্বা র বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, অভিযুক্ত চিকিত্সকদের ডাক্তারি পাশের শংসাপত্র খতিয়ে দেখার স্বার্থে তাঁদের খোঁজ চলছে। প্রয়োজনে তাঁরা যে সমস্ত ওষুধের দোকানে চেম্বার করে বসে রোগী দেখতেন, সেই সব দোকানের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে বেনামি উড়ো চিঠি আসার সঙ্গে সঙ্গে কী ভাবে অভিযুক্ত চিকিত্সকেরা পালিয়ে গেলেন, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। অভিযুক্ত চিকিত্সকদের সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কোনও আধিকারিক বা কর্মীর যোগাযোগ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধকারিক।
জেলাশাসক আয়েশা রানির দাবি, অভিযুক্ত ওই চার চিকিত্সককে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর ধরার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই চিকিত্সকদের শংসাপত্র ঠিক থাকলে বেনামি উড়ো চিঠি আসার পর থেকে তাঁরা নিখোঁজ হতেন না বলে আমাদের সন্দেহ।’’ তবে তাঁদের ধরে ডাক্তারি পাশের শংসাপত্র খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার স্বার্থে অভিযুক্তদের নাম গোপন রাখা হয়েছে। তার আগে অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ্যে আসলে তাঁদের ধরতে যেমন বেগ পেতে হবে, তেমনই প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত বিঘ্নিত হবে।
স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, অভিযুক্তদের মধ্যে এক চিকিত্সক দীর্ঘ দিন ধরে রায়গঞ্জের বিধাননগর এলাকার একটি ওষুধের দোকানের চেম্বারে বসে রোগীদের দেখতেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে ওই দোকানের মালিকের অভিযুক্ত চিকিত্সকের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তিনি তাঁকে উঠিয়ে দেন। এরপর থেকে তিনি শহরের মোহনবাটী এলাকার মসজিদ লাগোয়া একটি ওষুধের দোকানে বসে চুটিয়ে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করতেন।