সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডল। —ফাইল ছবি।
আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জামিনের বিরোধিতায় পলিগ্রাফ ও নার্কো পরীক্ষার অসম্মতিকে হাতিয়ার করল সিবিআই। সোমবার ওই দুই অভিযুক্তকে শিয়ালদহ অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের আদালতে পেশ করা হয়।
মামলার তদন্তকারী অফিসার লিখিত ভাবে বিচারককে জানান, ‘ওই দু’জনের মোবাইল ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষার পর ১৮ অক্টোবর আদালতে তাঁদের পলিগ্রাফ এবং নার্কো পরীক্ষার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা অসম্মতি প্রকাশ করেছেন।’
তদন্তকারী অফিসারের দাবি, মোবাইল ফোন থেকে বহু কল রেকর্ডিং এবং ভিডিয়ো মুছে ফেলা হয়েছিল। ফরেন্সিক পরীক্ষায় তা উদ্ধার হয়েছে। সে ক্ষেত্রে তদন্তকে বিপথে চালিত করা এবং খুন-ধর্ষণের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সাক্ষীকে লঘু করে দেখানো হয়েছে বলে একাধিক সূত্র পাওয়া গিয়েছে। ওই ঘটনায় তথ্য প্রমাণ লোপাট ও একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার ইঙ্গিতও পাওয়া গিয়েছে। তদন্তের অগ্রগতির স্বার্থে অভিযুক্তদের ওই দু’টি পরীক্ষার আবেদন করা হয়েছিল। ওই অফিসারের দাবি, সন্দীপ-অভিজিৎ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আড়াল করার জন্যই ওই পরীক্ষায় অসম্মতি প্রকাশ করে তদন্তে অসহযোগিতা করছেন এবং এই অসম্মতির বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে 'স্টেটাস রিপোর্টে' জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সিবিআই কর্তারা আগেই জানিয়েছিলেন, জামিনের বিরোধিতা এবং বিচারপ্রক্রিয়ায় দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে সন্দীপ এবং অভিজিতের বিরুদ্ধে বড় হাতিয়ার হয়ে উঠল ওই অসম্মতি। এক সিবিআই কর্তা বলেন, “অভিজিৎ পুলিশ অফিসার। আর সন্দীপ চিকিৎসক। ওই দু’টি পরীক্ষা সম্বন্ধে তাঁরা ওয়াকিবহাল। সে ক্ষেত্রে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হওয়ার আশঙ্কায় তাঁরা অসম্মতি জানিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। তাঁরা আর জি করের ঘটনায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্রকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন বলে পরবর্তী পর্যায়ে আদালতে লিখিত ভাবে জানানো হবে। ওই দু’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটেও দু’টি পরীক্ষায় অসম্মতির বিষয়টি উল্লেখ করা হবে।” প্রসঙ্গত, ওই অসম্মতি প্রকাশ অভিজিতদের বিরুদ্ধে বড় হাতিয়ার হয়ে উঠবে বলে সহমত প্রকাশ করেছিলেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এবং আলিপুর ফৌজদারি ও দেওয়ানী আদালতের প্রাক্তন মুখ্য সরকারি আইনজীবী রাধাকান্ত মুখোপাধ্যায়।