দু’টি জলজ্যান্ত সাপের প্রাণ বাঁচালেন পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।
মরণাপন্ন রোগী বা দুর্ঘটনাগ্রস্তের মুখে মুখে ঠেকিয়ে শ্বাস দিয়ে প্রাণ বাঁচানোর কথা তো শোনা যায়। তবে সাপের প্রাণ বাঁচাতে এমন করার কথা সচরাচর শোনা যায় কি? অত্যন্ত ঝুঁকির এমন কাজই করলেন জলপাইগুড়ির এক পরিবেশকর্মী। দু’টি সাপের মুখে মুখ ঠেকিয়ে শ্বাস দিয়ে তাদের জীবন ফেরালেন।
শনিবার বেলার দিকে জলপাইগুড়ি কলেজপাড়ার এক বাসিন্দার ঘরে আচমকাই ঢুকে পড়ে দু’টি কমন উল্ফ স্নেক। স্থানীয়ের কাছে যা ঘরচিতি, চালচিতি বা চিতিবোড়া সাপ নামেই পরিচিত।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুরোপুরিই নির্বিষ হলেও ঘরে দু’টি জলজ্যান্ত সাপ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাড়ির লোকজন। সাপ দু’টির গায়ে ফিনাইল ছিটিয়ে দেন তাঁরা। প্রাণে বাঁচতে দরজার পাশে থাকা একটি ভাঙা অংশের ভিতর আশ্রয় নেয় সাপ দু’টি। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে চেষ্টার পরেও সাপ দু’টিকে সেখান থেকে বার করতে না পেরে অবশেষে পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরীকে খবর দেন তাঁরা।
তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিশ্বজিৎ। প্রথমে সাপ দু’টিকে দরজার ভাঙা অংশ থেকে উদ্ধার করেন তিনি। তবে তত ক্ষণে ফিনাইলের বিষক্রিয়ায় সাপ দু’টি নিস্তেজ হয়ে ক্রমশই মৃত্যুমুখে ঢলে পড়ছে।
সাপ দু’টির অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক হওয়ায় বিশ্বজিৎ সিদ্ধান্ত নেন, হৃদ্যন্ত্র সচল রাখতে তাদের মাউথ-টু-মাউথ রেসপিরেশন (মুখে মুখ ঠেকিয়ে শ্বাস) দেবেন।
একে একে দু’টি সাপের মুখ নিজের মুখের ভিতর ঢুকিয়ে নিয়ে ক্রমাগত ফুঁ দিতে থাকেন বিশ্বজিৎ। এতে সাপগুলির অবস্থা খানিকটা স্বাভাবিক হয়। এর পর তাদের শরীরের বিষক্রিয়া কাটাবার জন্য জলে কস্টিক সোডা গুলে তা দিয়ে সাপ দু’টিকে ভাল করে স্নান করিয়ে দেন। এ বার শীতল জায়গায় সাপ দু’টিকে রেখে দেন তিনি।
ঘণ্টা দুয়েক পর দেখা যায়, সাপ দু’টি আবারও ভাল ভাবে নড়াচড়া শুরু করেছে। এ বার তাদের উপযুক্ত জায়গা দেখে সেখানে ছেড়ে দেন বিশ্বজিৎ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।