গুলিতে নিহত দেবী সান্যাল। নিজস্ব চিত্র।
রায়গঞ্জের দেবীনগর এলাকায় সোমবার রাতে চলল গুলি। এই ঘটনায় একই পরিবারের দুই মহিলা-সহ গুলিবিদ্ধ মোট তিন জন। তার মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি দু’জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী, সোমবার রাত ৯টা নাগাদ তিন ভাইবোন বাড়ির বাইরে গলিতে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। হঠাৎই একটি মোটরবাইক প্রবল গতিতে এসে দাঁড়ায় তাঁদের সামনে। তাতে ছিলেন তিন যুবক। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এর পর আচমকাই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে বাইক আরোহীরা। কিছু বোঝার আগেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দেবী সান্যাল (৩৭)। বাকি দুই ভাইবোন, সুজয়কৃষ্ণ মজুমদার এবং রূপা অধিকারীও গুরুতর জখম হন। বাইকটি যে ভাবে এসেছিল, সে ভাবেই চলে যায়।
ঘটনার পরই গুলিবিদ্ধদের দ্রুত রায়গঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, দেবী মারা গিয়েছেন। সুজয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর এবং রূপার অস্ত্রোপচার হয় রাতেই। কেন আচমকা এই হামলা, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এক জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।
সুজয়কৃষ্ণ শিলিগুড়িতে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের দ্বাদশ ব্যাটালিয়নের এএসআই। প্রথমে সন্দেহ করা হয়েছিল, তাঁর সঙ্গে কোনও শত্রুতার জেরে গুলি চলেছে। তবে পরে পুলিশের সন্দেহ, ভাড়াটে-বাড়িওয়ালা গোলমালের জেরে গুলি চলেছে। সুজয়কৃষ্ণদের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, তিন ভাইবোন রায়গঞ্জের দেবীনগর এলাকায় এসেছিলেন বাবা নিখিলকুমার মজুমদারকে দেখতে। নিখিলের আয়া চন্দনা সরকার বলেছেন, ‘‘সন্ধ্যায় কয়েক জন এসেছিল। তাদের সঙ্গে গোলমাল হয়। সব ঘটনাই ঘটে বাড়ির সামনের রাস্তায়। নিখিলবাবু দোতালায় থাকেন। দোতালার বারান্দা থেকে আমি দেখেছিলাম সেই গোলমাল। পরে সবাই চলে যায়। নিখিলবাবুর ছেলে মেয়ে দোতালায় চলে আসে। ফের ওই ব্যক্তিরা ফিরে এসে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। সুজয়বাবুরা সবাই নীচে নামেন। এর পরই গুলির শব্দ শোনা যায়। বারান্দা থেকে দেখি কয়েক জন চলে যাচ্ছে। আর সুজয়বাবুরা রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছে।’’
পুলিশ মনে করছে, দেশি পিস্তল জোগাড় করে হামলা চালানো হয়েছে। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরশ বর্মা অবশ্য বলেন, ‘‘এখনও গুলি চালানোর কারণ জানা যায়নি। পুলিশ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে।’’