শুধু যোগ দিবস পালন নয়, পড়ুয়া, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের যোগ-এ উৎসাহী করতে উদ্যোগী উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়েও তা পালন করা হবে। কিন্তু শুধু ওই দিনটিতেই নয়। তার আগে যোগ বিষয়ে প্রশিক্ষণ, অনুশীলন এবং সেই সম্পর্কে জানার জন্য দুই দিন ব্যাপী ‘যোগ ফেস্ট’-এর আয়োজন করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কী ভাবে কী করা হবে তা নিয়ে কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। ঠিক হয়েছে আগামী ৩০-৩১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ‘খেলাঘর’-এ ওই ফেস্ট হবে। ২৩-২৪ মে এই দুই দিন নাম নথিভুক্ত করানোর দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া-গবেষক, শিক্ষক-অধ্যাপক, কর্মী-আধিকারিক যে বা যাঁরা অংশ নিতে চান তারা ওই দুই দিনে নাম নথিভুক্ত করাবেন।
যোগা ফেস্টের প্রথম দিন উত্তরবঙ্গ যোগা অ্যাকাডেমির তরফে প্রশিক্ষকরা থাকবেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর ওই দিন বিভিন্ন যোগাসন করার নিয়ম, পদ্ধতি শেখানো হবে। অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থীরা করেও দেখাবেন। ওই দিন অন্তত ঘন্টা দুয়েক অনুশীলনের সুযোগ পাবেন অংশগ্রহনকারীরা। দ্বিতীয় দিন পড়ুযাদের জন্য যোগ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিযোগিতার পর থাকবে ধ্যানযোগ, যোগ ব্যাযাম বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বক্তৃতা। যোগের উপকারিতা, প্রয়োজনীয়তার বিভিন্ন দিকগুলি তারা তুলে ধরবেন।
২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘটা করে আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের তরফে এই যোগ বিষয়ে কর্মসূচি নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম-এর পোস্টগ্রাজুয়েট ইউনিট এবং স্পোর্টস বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল ছোট আকারে। শিলিগুড়ি যোগা অ্যাকাডেমির তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ ব্যায়াম করে দেখান প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা। ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ছোট আকারে হয়েছিল কর্মশালাও। এ বছর আলাদা কমিটি গড়ে বড় আকারে আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যোগের বিষয়টি পড়ুযাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ বলে জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জনিয়েছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়েছে। যোগ নিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে প্রতিযোগিতার বিষয়টিও ভাবা হয়েছে তাদের উৎসাহী করে তুলতে। আগ্রহীদের নাম নথিভুক্ত করাতে হবে কেন না ওই ফেস্টে তাদের বিশেষ পোশাকও দেওয়া হচ্ছে। ধ্যান এবং যোগ ব্যায়ামে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের এনে তাদের কথা শোনার সুযোগ করে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্তস্তরের ছাত্রছাত্রী এবং উৎসাহী শিক্ষক-শিক্ষিকারাও যাতে অংশ নেন সে ব্যাপারে কমিটি সচেষ্ট।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন তাঁরা। বর্তমানে শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকায় কয়েকটি সংগঠনের তরফে কিছু যোগের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও সে ভাবে চর্চা অনেক ক্ষেত্রেই গড়ে ওঠেনি। কর্তৃপক্ষ মনে করেন, শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মানসিক বিকাশের জন্য যোগের ভূমিকা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করাই এর মূল উদ্দেশ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশ কলেজগুলিতেও কার্যকর করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কলেজগুলিতেও আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।