Kunal Ghosh

‘লটারি রাজা’-র সংস্থা থেকে ৫৪২ কোটি পেয়েছে দল! কিন্তু কার টাকা এল, জানা ছিল না, বলছে তৃণমূল

কেন এ রাজ্যের শাসক দলকে লটারি সংস্থা এত বিপুল অর্থ দিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূল অবশ্য সেই দায়িত্ব মানতে নারাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৪ ০৬:৩৯
Share:

কুণাল ঘোষ। — ফাইল চিত্র।

বন্ড মারফত দলীয় তহবিলে টাকার উৎস নিয়ে শুরু বিতর্কের দায় এড়াল তৃণমূল কংগ্রেস। ‘লটারি রাজা’ হিসেবে পরিচিত সান্টিয়াগো মার্টিনের ‘ফিউচার গেমিং’ সংস্থা থেকে ৫৪২ কোটি টাকা পাওয়ার পিছনে দলের কোনও ভূমিকা নেই বলেও দাবি করেছেন দলীয় নেতৃত্ব। রাজ্য তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘কোন কোম্পানি কত টাকা দিয়েছে, তা তৃণমূল জানত না।’’

Advertisement

নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে দলীয় তহবিলে প্রাপ্য অর্থ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক বিজেপি এবং তৃণমূল। রাজনৈতিক দলের তহবিলে এই দান নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে লটারি সংস্থা ‘ফিউচার গেমিং’-এর দেওয়া টাকা নিয়েও। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে যে হিসেব সামনে এসেছে, তাতে ওই সংস্থা সব থেকে বেশি টাকা দিয়েছে তৃণমূলকে। বিজেপিকে দেওয়া তাদের অর্থের পরিমাণ তৃণমূলের অর্ধেক। এই তথ্য সামনে আসার পরে যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, তা এড়াতে কুণাল শনিবার বলেন, ‘‘এই নিয়ম তো তৈরি করেছিল বিজেপি সরকার। তৃণমূল করেনি। তৃণমূলের পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না, কে কত টাকা দিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, বন্ড-এ দাতার কোনও উল্লেখ থাকে না। সেখানে যে নম্বর থাকে, তা থেকে কে দিয়েছে তা জানা সম্ভব নয়। তৃণমূল ভবনে বক্সে এসে কারা বন্ডে টাকা রেখে গিয়েছে, তা তাঁদের জানা ছিল না বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি।

কেন এ রাজ্যের শাসক দলকে লটারি সংস্থা এত বিপুল অর্থ দিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূল অবশ্য সেই দায়িত্ব মানতে নারাজ। কুণালের ব্যাখ্যা, ‘‘হয়তো তৃণমূল সরকারের কাজ কারও ভাল লেগেছে। তাই দিয়েছে।’’ তবে এই দানের পিছনে শাসক হিসেবে তৃণমূলের ভূমিকা থাকার কথা অস্বীকার করে তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপির হাতে এজেন্সি রয়েছে। তারা সিবিআই, ইডি পাঠিয়ে একটা পদ্ধতিতে টাকা নিয়েছে। তৃণমূলের হাতে তা নেই। তাই সেই দরাদরি করে টাকা আদায় তৃণমূলের পক্ষে সম্ভব নয়।’’

Advertisement

বিরোধীরা অবশ্য তৃণমূলের এই দাবিকে কটাক্ষ করছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলকে কিছু না জানিয়ে কারা যেন এসে ড্রপ বক্সে কোটি কোটি টাকা রেখে গিয়েছেন! মানুষকে এত নির্বোধ ভাবেন? দিল্লিতে আবগারি-কাণ্ডের জন্য মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে প্রধান চক্রী (কিংপিন) আখ্যা দিয়ে গ্রেফতার করেছে ইডি। এই বন্ড কেলেঙ্কারির জন্য কেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে না? লুট, দুর্নীতি, বন্ডের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই বা কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?’’ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের কটাক্ষ, ‘‘যে তৃণমূল ভবনে কেউ যায়ই না, সেখানে দলে দলে গিয়ে ড্রপ বক্সে সবাই টাকা দিয়ে দিল! গল্পের একটা সীমা থাকা উচিত!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement