—ফাইল চিত্র।
রাজ্যে নির্বাচন হওয়ার মতো সুষ্ঠু ও অবাধ পরিবেশ নেই বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানাতে চলেছেন বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। সংসদ চলাকালীনই দল বেঁধে গিয়ে এই অভিযোগ জানানোর পরিকল্পনা করছেন বিজেপির নেতা-সাংসদেরা।
আজ থেকে দিল্লিতে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আগামী ছয় মাস কী ভাবে বাংলায় প্রচার চালানো হবে, তা ঠিক করতেই দু’দিনের এই বৈঠক করবেন রাজ্য ও কেন্দ্র নেতৃত্ব। তার পরে বুধবার দিল্লিতে উপস্থিত বাংলার বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা। আজ রাজ্য বিজেপির পক্ষে বৈঠকে ছিলেন মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিন্হা। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং অরবিন্দ মেননরা। আজ সকাল থেকে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাড়িতে শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় বেলা দু’টো নাগাদ। বৈঠক সম্পর্কে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে রোজ বিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। সন্ত্রাসবাদী ও মাওবাদীদের প্রশয় দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের যা আতঙ্কের বাতাবরণ রয়েছে তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। বিষয়টি নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-কে জানানো হবে।’’
তা হলে কি পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানাবে বিজেপি? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এড়িয়ে যান দিলীপ। দলীয় সূত্রের মতে, কৌশলগত কারণেই ‘রাষ্ট্রপতি শাসন’ বা ৩৫৬ ধারার মতো শব্দ ব্যবহারের পক্ষপাতী নন বিজেপি নেতৃত্ব। সে ক্ষেত্রে সরকার ‘ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত’ তুলে ধরে সহানুভূতির ভোট কুড়োবার চেষ্টা করতে পারেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
আজকের বৈঠকে আগামী ছয় মাস প্রচার চালানোর প্রশ্নে দুর্গা পুজোকে যথাসম্ভব কাজে লাগানোর জন্য রাজ্য নেতৃত্বের পরামর্শে সহমত হয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। করোনা সংক্রমণের ভয় থাকলেও, আজকের বৈঠকে আসন্ন উৎসবের মরসুমকে জনসংযোগ বাড়ানোর জন্য বিশেষ ভাবে জোর দেন রাজ্য নেতারা। বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্ব জানান, দুর্গা পুজোর সময়ে জনসংযোগ বাড়ানো, মানুষের কাছে পৌঁছানোর যে সুযোগ রয়েছে তা হাতছাড়া করা উচিত নয়। দলের উচিত দুর্গা পুজোকে মাথায় রেখে সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া। একই সঙ্গে রাজ্যে হওয়া আমপান-দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, জঙ্গি সমস্যার মতো বিষয়ে ধারাবাহিক রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করার উপরে জোর দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। আজ বৈঠক শেষে মুকুল রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি মুখ খুলতে চাননি। বলেন, যা বলার তা দিলীপ ঘোষ বলবেন। জনসংযোগ বাড়ানোর প্রশ্নে দিলীপ বলেন, ‘‘ভোট এগিয়ে আসছে। তাই আগামী দিনে দলের রণকৌশল কেমন হবে, তা ঠিক করার জন্য আজ ও কাল আলোচনা হবে। প্রচার ও জনসংযোগের প্রশ্নে দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা বুধবারের বৈঠকে সাংসদদের জানিয়ে দেওয়া হবে।’’