প্রতীকী চিত্র।
তদন্ত শেষ করে ৭ বছর আগে চার্জশিট জমা পড়েছে আদালতে। তার পরে দু’টি লোকসভা এবং একটি বিধানসভার ভোট হয়ে গেলেও বাম আমলে আবাসন দুর্নীতি মামলার এখনও চার্জ গঠনই হয়নি! ওই মামলায় মূল অভিযুক্ত প্রাক্তন আবাসনমন্ত্রী এবং সিপিএম নেতা গৌতম দেব। তিনি ছাড়াও আরও ১৭ জন এই মামলায় অভিযুক্ত রয়েছেন। সাত বছরেও চার্জ গঠন না-হওয়ায় মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন অভিযুক্তেরা।
গৌতমবাবু-সহ ১৩ জন অভিযুক্তের আইনজীবী ইয়াসিন রহমান সোমবার বলেন, “রাজনৈতিক চক্রান্তের স্বীকার তাঁর মক্কেলরা। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা। আমার মক্কেলদের যাতে এই মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হয় তার আবেদনের শুনানি হয়েছে তিন দিন। পরবর্তী শুনানির দিন ৯ ডিসেম্বর। চাই দ্রুত আমাদের মক্কেলদের ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।”
মামলাটির তদন্ত করেছে সিআইডি। সূত্রের খবর, বাম আমলে আবাসন দফতর নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তদের ফ্ল্যাট তৈরির জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে ৪৫.৬৯ একর জমি লিজ দিয়েছিল মহেশতলার কাছে। অভিযোগ, ওই সংস্থা তাতে ফ্ল্যাট না বানিয়ে অন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে দেয়।
২০০৪-এ জমিটি ফের হাত বদল হয়ে যায়। বারবার জমি হাতবদল হলেও কোন সংস্থাই ওই জমিতে ফ্ল্যাট তৈরি করেনি। রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল ওই অভিযোগ তুলে তালতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করে আবাসন দফতর। ওই বছরের সেপ্টেম্বরেই গৌতম দেব-সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে কলকাতা নগর দায়রা আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়।
চার্জশিটে তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, বারবার দরপত্র ছাড়া বেআইনি ভাবে জমি হস্তান্তরের হয়েছে। তার ফলে আবাসন দফতর প্রাপ্য অর্থ পায়নি। আবার নির্দিষ্ট সময়ে ফ্ল্যাট দিতে না-পারার জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ বেসরকারি সংস্থার যে-টাকা দেওয়ার কথা, তা-ও দেওয়া হয়নি। সব মিলিয়ে মোট ২০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে আবাসন দফতরের।
এত গুরুত্বপূর্ণ মামলার চার্জ গঠন না-হওয়ার পিছনে তদন্তকারী সংস্থা ও সরকারি কৌঁসুলিদের যুক্তি, করোনার জন্য বিচার প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত এবং মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদনের ফলেই দেরি হয়েছে। সরকারি আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘করোনার জন্য ব্যাঘাত ঘটেছে মামলার অব্যাহতি সংক্রান্ত শুনানিতে। আমরা চাই মূল মামলার দ্রুত শুনানি হোক।”
লকডাউন হয়েছে মার্চে। তার আগে কেন চার্জ গঠন হয়নি? তদন্তকারীদের দাবি, আগেও অভিযুক্ত পক্ষ চার্জ গঠনে বাধা দিয়েছেন। যদিও অভিযুক্ত পক্ষের দাবি, জোর করে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে সরকার।