সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে জ্বালানো হয় টায়ার।—ছবি পিটিআই।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে যে-সব হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, তাতে কেউ হতাহত হননি বলে কলকাতা হাইকোর্টে জানাল রাজ্য সরকার। ওই সব ঘটনার জেরে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার এ কথা জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। সেই সঙ্গে তিনি জানান, ১৩ ডিসেম্বর থেকে ওই সব বিচ্ছিন্ন ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৯৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে ৬৪টি। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে বলেও দাবি করেন এজি।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এজি এ দিন একটি নথি পেশ করে জানান, এ রাজ্যে ৭১৫টি রেল স্টেশন রয়েছে। তার মধ্যে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর হয়েছে পাঁচ-ছ’টি ছোট স্টেশনে।
নাগরিকত্ব আইন সংশোধন নিয়ে এ দিনও একটি জনস্বার্থ মামলা হয় ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলার আবেদনকারীর আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরী জানান, ওই আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ৫৯টি মামলা হয়েছে। শীর্ষ আদালত ওই আইনের উপরে স্থগিতাদেশ দেয়নি। সর্বোচ্চ আদালত মৌখিক ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, জনসাধারণের কাছে ওই আইন যথাযথ ভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। তার জেরে বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনও দিয়েছে কেন্দ্র। তার পরেও এ রাজ্যে ওই আইন মানা হবে না বলে প্রচার করা হচ্ছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন মানা হবে না বলে রাজ্য সরকার যে-ঘোষণা করছে, তা সংবিধান-বিরোধী। এই অভিযোগ শুনে ডিভিশন বেঞ্চ এজি-কে নির্দেশ দেয়, এই বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্য জেনে আদালতে জানানো হোক।
আরও পড়ুন: দলের রং ছাড়াই বর্ণময় মানুষের মোহনা
নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের বিরোধিতা করে জনগণের টাকায় রাজ্য সরকারের তরফে বিভিন্ন সংবাদপত্রে পাল্টা প্রচারও সংবিধান-বিরোধী, এই মর্মেও জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। সেই মামলার শুনানিতে আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, মন্ত্রী-সাংসদেরা কেন্দ্রীয় আইন নিয়ে বিতর্কে যোগ দিতে পারেন। কিন্তু কেউ জনগণের টাকা অপচয় করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের বক্তব্য জেনে আদালতকে জানানোর জন্য এজি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধর্মঘটে হুঁশিয়ারি, ডাক বাম মিছিলে
কেন্দ্রের পক্ষে আইনজীবী অশোক চক্রবর্তী আদালতে জানান, হিংসাত্মক ঘটনায় রেলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার ক্ষতিপূরণের কী হবে? ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, রেলের সম্পত্তি রক্ষার জন্য রেলের নিজস্ব বাহিনী রয়েছে। রেল কী করে তার সম্পত্তি রক্ষা করবে, তা আদালত ঠিক করবে কেন!